শীত এলেই বাড়ে চুলকানির সমস্যা—জানুন প্রতিকার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

শীতকাল এলেই অনেকের সবচেয়ে বিরক্তিকর সমস্যাগুলোর একটি হলো ত্বকের চুলকানি। গা শিরশির করা এই অস্বস্তি অনেক সময় ঘুম, কাজে মনোযোগ—সব কিছু নষ্ট করে দেয়। কিন্তু কেন শীতে এমন সমস্যা বাড়ে? চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা কমে যাওয়া এবং বাতাসে আদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়ে পড়ে। এর ফলে ত্বকের ওপরের সুরক্ষামূলক স্তর কমে গিয়ে তৈরি হয় চুলকানি, র‍্যাশ এমনকি একজিমার মতো সমস্যা।

শীতে চুলকানি বাড়ার প্রধান কারণ-
বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়া
শীত পড়লেই বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। একই সঙ্গে ঘরের ভেতরে বেশি সময় কাটানো, হিটার বা রুম ওয়র্মার ব্যবহারের কারণে ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে। এই শুষ্কতা ত্বকের কোষগুলোকে দুর্বল করে চুলকানি সৃষ্টি করে।

গরম পানিতে গোসল
ঠান্ডার সময় অনেকেই গরম পানিতে গোসল করেন। কিন্তু অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে ফেলে দেয়, যা ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে।

বাতাসের ধুলো ও দূষণ
শীতকালে বাতাসে ক্ষুদ্র ধুলিকণার পরিমাণ বাড়ে। এগুলো ত্বকে লেগে চুলকানি, র‍্যাশ, অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে।

টাইট বা মোটা কাপড়
শীতে আমরা সাধারণত উলের বা মোটা কাপড় ব্যবহার করি। কিছু কাপড় ত্বকে ঘর্ষণ তৈরি করে, যার ফলে চুলকানি বাড়তে পারে। উল অ্যালার্জিও অনেকের ত্বকে সমস্যা তৈরি করে।

কম পানি পান করা
ঠান্ডায় অনেকেই পানি কম পান করেন। শরীরে পানির ঘাটতি হলে ত্বক স্বাভাবিকভাবেই শুষ্ক হয় এবং চুলকানি শুরু হয়।

প্রতিকার পেতে যা করবেন-
নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন
গোসলের পর ভেজা ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগালে তা বেশি কার্যকর হয়। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, শিয়া বাটার, গ্লিসারিন যুক্ত ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন।

গরম পানি নয়, কুসুম গরম পানি
অতিরিক্ত গরম পানি এড়িয়ে চলুন। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় থাকে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন
শীতে তৃষ্ণা কম পেলেও নিয়ম করে পানি পান করা জরুরি। দিনে অন্তত ৬–৮ গ্লাস পানি পান করুন।

উলের নিচে সুতির জামা পরুন
যদি উল আপনাকে অ্যালার্জি দেয়, তাহলে উলের সোয়েটারের নিচে সুতির জামা পরুন। এতে ত্বকে ঘর্ষণ কম হবে।

শরীরে তেল মালিশ
গোসলের আগে নারকেল তেল বা সরিষার তেল মালিশ করলে ত্বক নরম থাকে এবং চুলকানি কমে।

ঘর পরিষ্কার ও ধুলোমুক্ত রাখুন
ধুলার কারণে অ্যালার্জি বাড়তে পারে। তাই শীতকালে ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যালার্জি বা একজিমা থাকলে চিকিৎসা নিন
কারও যদি একজিমা, সোরিয়াসিস বা ত্বকের অ্যালার্জির পুরোনো সমস্যা থাকে, শীতে তা বেড়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ বা মেডিকেটেড মলম ব্যবহার করতে হবে।

শীতে চুলকানি একটি খুব সাধারণ সমস্যা হলেও তা অবহেলা করলে ত্বক ফেটে যাওয়া, র‍্যাশ বা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন, নিয়মিত ত্বক পরিচর্যা এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ—এই তিনটি বিষয় মেনে চললে শীতেও ত্বক থাকবে স্বস্তিদায়ক ও সুস্থ।


সর্বশেষ সংবাদ