ঘন ঘন জ্বর! হতে পারে যেসব রোগের লক্ষণ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

জ্বর এমন একটি উপসর্গ, যা আমাদের শরীরে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। মাঝে মাঝে জ্বর হওয়া সাধারণ ব্যাপার, কিন্তু যদি ঘন ঘন জ্বর আসে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে সেটি শরীরের ভেতরে লুকিয়ে থাকা গুরুতর কোনো অসুস্থতার সংকেত হতে পারে। তাই জ্বরকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।

নিচে ঘন ঘন জ্বর হওয়ার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ ও রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো—

সংক্রমণজনিত রোগ
ঘন ঘন জ্বরের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ। 
যেমন ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ: টনসিল, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI), নিউমোনিয়া ইত্যাদি।
ভাইরাল সংক্রমণ: ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, কিংবা সাম্প্রতিক সময়ের ভাইরাল ফ্লু।
পরজীবী সংক্রমণ: ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড ইত্যাদি।
এই সংক্রমণগুলো শরীরে প্রবেশ করে ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে, ফলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়।

দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনিত রোগ 
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ক্রোনস ডিজিজ বা অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। এই ধরনের রোগে শরীর নিজের টিস্যুর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখায়, ফলে হালকা জ্বর বারবার দেখা দেয়।

টিউবারকুলোসিস
দীর্ঘ সময় ধরে সামান্য জ্বর, শরীরের দুর্বলতা, ওজন কমে যাওয়া—এসব উপসর্গ টিবির সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় এই জ্বর বিকেলের দিকে বা রাতে বাড়ে। টিবি ফুসফুস ছাড়াও কিডনি, হাড় কিংবা মস্তিষ্কেও হতে পারে।

হরমোনজনিত বা বিপাকীয় সমস্যা
থাইরয়েডের সমস্যা, বিশেষ করে হাইপারথাইরয়েডিজম, শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, ফলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে এবং ঘন ঘন জ্বর অনুভূত হতে পারে।

ভাইরাল রিল্যাপস বা লং ভাইরাস ইনফেকশন
অনেক সময় ভাইরাস শরীরে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল না হয়ে লুকিয়ে থাকে। কিছুদিন পর আবার সক্রিয় হয়ে হালকা জ্বর সৃষ্টি করে। এটি লং কোভিড বা রিল্যাপস ভাইরাল ইনফেকশন হিসেবেও দেখা যায়।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
জ্বর যদি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয়
প্রতি সপ্তাহে বা মাসে বারবার ফিরে আসে
জ্বরের সঙ্গে ওজন কমে, রাতে ঘাম হয় বা দুর্বল লাগে

কী করবেন?
বিশ্রাম নিন ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন
তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন
নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার না করে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করুন

ঘন ঘন জ্বর শরীরের ছোটখাটো অস্বস্তি নয়—এটি হতে পারে বড় রোগের প্রাথমিক বার্তা। তাই প্রতিবার জ্বরকে অবহেলা না করে কারণ অনুসন্ধান করাই বুদ্ধিমানের কাজ। সচেতন থাকুন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন, সুস্থ থাকুন।


সর্বশেষ সংবাদ