সিগারেট টানার ১০ সেকেন্ডের মাথায় শুরু হয় অ্যাকশন
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০৮:৪৮ PM , আপডেট: ২১ জুন ২০২৫, ০৯:০৪ PM
ধূমপান যে শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তা অনেকেই জানেন। তবে মাত্র একটি সিগারেট খেয়ে মাত্র ১০ সেকেন্ডে মস্তিষ্কে কী ঘটে, তা জানলে আপনি হয়তো আর কখনো সিগারেটের ধোঁয়ার কাছে ঘেঁষতেও চাইবেন না।
সম্প্রতি ‘অ্যানিমেটেড বায়োমেডিকেল’ নামক একটি সংস্থা একটি অ্যানিমেশন ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে ধূমপানের পর নিকোটিন কীভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কে দ্রুত কাজ শুরু করে।
নিকোটিনের প্রবেশ ও আসক্তির শুরু
ধূমপান করার সঙ্গে সঙ্গে নিকোটিন ফুসফুস থেকে রক্তপ্রবাহে মিশে মাত্র ১০ সেকেন্ডেই মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। মস্তিষ্কে পৌঁছেই এটি ডোপামিন নামক রাসায়নিক নিঃসরণ ঘটায়, যা সাময়িকভাবে ‘সুখ’ বা ‘আরাম’ অনুভূতির সৃষ্টি করে। এই স্বল্পমেয়াদি সুখানুভূতিই মস্তিষ্কে নেশা তৈরি করে। পরবর্তীতে সেই অনুভূতির পুনরাবৃত্তির জন্য মানুষ বারবার সিগারেটের দিকে হাত বাড়ায়।
মস্তিষ্কে ধীরে ধীরে নিকোটিনের দখলদারিত্ব
সময় যত গড়ায়, মস্তিষ্ক এই সুখানুভূতির সঙ্গে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে যে, নিকোটিন না পেলে মানুষ অস্বস্তি, রাগ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা অনুভব করে। এভাবেই ধূমপান পরিণত হয় নিকোটিন নির্ভরতা বা আসক্তিতে।
স্মৃতি দুর্বল হয়
ধূমপানের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে শুধু শ্বাসযন্ত্র নয়, মস্তিষ্কেরও স্থায়ী ক্ষতি হয়। মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা স্মৃতি ও শেখার ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণা অনুযায়ী, ধূমপান করলে ব্রেন সেল ধ্বংস হয় এবং মস্তিষ্ক সংকুচিত হতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, কম বয়সেই দেখা দেয় ভুলে যাওয়ার সমস্যা, মনঃসংযোগের অভাব, এবং চিন্তাশক্তির দুর্বলতা।
ব্রেন স্ট্রোক ও ক্যানসারের ঝুঁকি
নিকোটিন ও অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে। এর ফলে বৃদ্ধি পায়: রক্তচাপ, ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি, ক্যানসারের সম্ভাবনা (বিশেষ করে মুখ, গলা ও ফুসফুসে)।
আরও পড়ুন: মেধা বাড়াতে চাইলে বদলে ফেলুন এই অভ্যাসগুলো
সিগারেট ছাড়া এত কঠিন কেন
নিকোটিন নির্ভরতার কারণে সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা করলে অনেকেই ভোগেন: মানসিক অস্থিরতা, বিরক্তিভাব, বিষণ্নতা।
নিকোটিনের তীব্র চাহিদা
এই উপসর্গগুলোই মানুষকে আবারও সিগারেট খেতে বাধ্য করে, এবং নেশার চক্র থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
আশার আলো: সিগারেট ছাড়লেই লাভ
ভালো খবর হলো, সিগারেট খাওয়া বন্ধ করলে শরীর ও মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে শুরু করে। ৫ বছরের মধ্যেই ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়। শরীরে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ কমে এবং রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কিছুটা হলেও উন্নত হয় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।