তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু জুলাই থেকে

সিনোফার্মের টিকা
সিনোফার্মের টিকা  © ফাইল ফটো

আগামী জুলাই থেকে সিনোফার্মের টিকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে। প্রথমে আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। টিকার পরবর্তী চালান এলে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরও টিকার আওতায় আনা হবে। তবে তাদের টিকা নিতে প্রয়োজন হবে না প্রচলিত রেজিস্ট্রেশনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ও আবাসিক হলে থাকার প্রমাণপত্র দেখালেই টিকা নিতে পারবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, দেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে তিনটি অ্যাফিলাইটিং ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বাদে মোট ৩৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২০টি আবাসিক হলের এক লাখ তিন হাজার ১৫২ জন শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রসহ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া টিকা নেননি এমন চার হাজার ১৩৯ জন শিক্ষক ও আট হাজার ৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর তথ্যও পাঠানো হয়েছে, যারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন। এর বাইরে আবাসিক হলে থাকা আরও প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী আছেন, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখিয়েই টিকা নিতে পারবেন। মোট এক লাখ ৩১ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীকে প্রথম পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম চলছে। আগামী মাসের প্রথমার্ধে তাদের প্রথম ডোজের টিকাদান কার্যক্রম শেষ দিকে থাকবে। এর পরই টিকার বর্তমান মজুদ থেকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। চীনের সিনোফার্মের টিকা শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।

দেশে উচ্চশিক্ষায় মোট শিক্ষার্থী ৩৯ লাখ। এর মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজেই পড়ালেখা করেন ২৭ লাখ শিক্ষার্থী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মাত্র পৌনে চার লাখ। এর মধ্যে প্রথম ধাপে আবাসিক এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এবং পরের ধাপে বাকি শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।

এরপর বেসরকারি ১০৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। যেহেতু এখনো টিকার খুব একটা সহজলভ্যতা নেই তাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা ভাবা হয়নি। অথচ সরকারি কলেজসহ বড় বড় বেসরকারি কলেজেও লাখ লাখ শিক্ষার্থী কলেজ হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো তালিকায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আবাসিক শিক্ষার্থী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, ২৫ হাজার ২৪৫ জন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ হাজার ১৩০ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আট হাজার ৬৩০ জন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজার একজন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ হাজার ৬৬৯ জন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার হাজার ৫০০ জন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৯৮৭ জন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৯০ জন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৫৫৩ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৮৪৫ জন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন হাজার ৬৫৩ জন, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজার ২১৪ জন, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই হাজার ২৮ জন, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৫১৯ জন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ৪১৩ জন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার ২২২ জন। অন্য বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই আবাসিক শিক্ষার্থী এক হাজারের নিচে রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীন বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের জায়গা থেকে যা যা করণীয় সেগুলোর কাজ চলছে। আশা করছি, জুলাই থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ