‘করোনার নতুন স্ট্রেইন শনাক্তের সক্ষমতা নেই বাংলাদেশের’
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৩৮ AM , আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:৫৮ AM
যুক্তরাজ্যে শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন আর বাংলাদেশে শনাক্ত নতুন স্ট্রেইনকে এক বলার সুযোগ নেই। তাছাড়া বাংলাদেশে আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় নতুন স্টেইন শনাক্তের সুযোগ বা সক্ষমতা নেই। বাংলাদেশে নতুন স্ট্রেইন আছে কি না, তারচেয়ে বড় বিষয় চলে আসার সম্ভাবনা অস্বীকার করা যায় না। কোনোভাবে যদি নতুন স্ট্রেইন বাংলাদেশে চলে আসে তবে তা সংক্রমণের বিস্তার ত্বরাণ্বিত করতে পারে।
অনুজীব বিজ্ঞানী ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. বিজন কুমার শীল এবং দ্য ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের সিনিয়র গবেষক ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘ব্রিটেনে শনাক্ত নতুন স্ট্রেইনের অস্তিত্ব বাংলাদেশে আছে কিনা, তা জানতে ‘থ্রি-জিন’ পরীক্ষা করতে হবে। এর একটি জিন ‘এস-জিন’, যা স্পাইক প্রোটিনকে শনাক্ত করে। বাকি দুটো জিন ওআরএফ-১এবি এবং এন-জিন। বাংলাদেশের আরটি পিসিআরে থ্রি জিন পরীক্ষার সুযোগ না থাকায় নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত করা যাবে না।’
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশকে জরুরি ভিত্তিতে থ্রি জিন পরীক্ষার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। প্রতি ১০০টি কোভিড-১৯ পরীক্ষার কমপক্ষে পাঁচটি সিকোয়েন্সিং করতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ লন্ডন ও কেন্ট অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে। এ অঞ্চলে বহুসংখ্যক বাংলাদেশি বসবাস করেন। তারা নিয়মিত যাতায়াত করছেন। তাদের মাধ্যমে দেশে নতুন স্ট্রেইনটি ইতোমধ্যে চলে এসেছে কিনা তাও ভেবে দেখার বিষয়।’
ড. বিজন বলেন, ‘ভাইরাসের চরিত্রই এমন, সে বারবার নিজেকে পরিবর্তন করে। উহানে শুরুর সময়ের করোনাভাইরাস আর এখনকার করোনাভাইরাস এক নয়। বারবার পরিবর্তন হয়েছে। ব্রিটেনে শনাক্ত নতুন স্ট্রেইনের ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন হয়েছে। নতুন স্ট্রেইনের স্পাইক প্রোটিনের ১৭ টি স্থানে মিউটেশন বা পরিবর্তন শনাক্ত হয়েছে। সাধারণত এক সঙ্গে এত ব্যাপক সংখ্যক পরিবর্তন হয় না, এক্ষেত্রে যা হয়েছে।’
ড. আকরাম বলছিলেন, ‘নতুন স্ট্রেইনে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের ১৭টি স্থানে মিউটেশন বা পরিবর্তনের মধ্যে একটি পরিবর্তনের হয়েছে প্রোটিনটির ৬৮১তম স্থানে (পি-৬৮১-এইচ)। বাংলাদেশে নতুন স্টেইনের যে তথ্য জানা গেছে তাতে দেখা যায় সেখানেও স্পাইক প্রোটিনে পরিবর্তন বা মিউটেশন হয়েছে ৬৮১ তম স্থানে (পি-৬৮১-আর)। ব্রিটেন এবং বাংলাদেশের এই নতুন স্ট্রেইন দুটিতে মিউটেশন বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্থানিক বা লোকেশনে মিল থাকলেও, অমিল রয়েছে প্রোটিনের এমাইনো এসিডের পরিবর্তনে।’
তারা বলেন, ‘ব্রিটেন থেকে যাওয়া যাত্রীদের বাংলাদেশ প্রথমে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা বলছে। এতে কোনো কাজ হবে না। নতুন করে যে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের সিদ্ধান্ত, তা প্রশংসনীয়। তবে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ঝুঁকিতে পড়ে গেছে কিনা, সেটা চিন্তার বিষয়। আতঙ্কিত নয়, ভয়াবহতার গুরুত্ব উপলদ্ধি করে সতর্কতা জরুরি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া দরকার মাস্ক ব্যবহার। বাংলাদেশে ভ্যাকসিন কবে-কীভাবে পাবে তা নিশ্চিত নয়। ফলে ভ্যাকসিনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার মাস্কে।’