আরও এক মাস সরকারি বাসভবনে থাকতে বাধা নেই আসিফ-মাহফুজের
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১৮ PM , আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৮ PM
গেল সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই ছাত্র প্রতিনিধি আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম। তবে তারা এখনো সরকারি বাসভবন ছাড়েননি। এক সপ্তাহ পর এসে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা নিয়ে চলছে তর্ক-বিতর্ক। আর এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা রীতিমতো ধুয়ে দিচ্ছেন।
তবে মন্ত্রী কিংবা উপদেষ্টাদের সরকারি বাসভবন ব্যবহারের সময়সীমা নিয়ে বিদ্যমান যে আইন রয়েছে তা লঙ্ঘন করেননি এই দুই ছাত্র প্রতিনিধি। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই সরকারি বাসায় থাকছেন তারা।
জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় আসিফ ও মাহফুজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপস্থিত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টা তা গ্রহণ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এ পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে।
এর পরদিন ১১ ডিসেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন। এরপর সন্ধ্যায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলে এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগপত্র কার্যকর হয়।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘এক সপ্তাহ আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা দুই তরুণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলম এখনো সরকারি বাসভবন ছাড়েননি।’
‘কবে ছাড়বেন, সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে। বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীল কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি।’
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই সরকারি বাসায় থাকছি আমরা। এ ছাড়াও দুই মাস পর্যন্ত গ্রেস পিরিয়ড বাসায় থাকার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই বলেও জানান তিনি।’
কী বলছে আইন?
বাংলাদেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা কী ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন তা আইনে নির্ধারিত আছে। ১৯৭৩ সালের ওই আইনের শিরোনাম ‘দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমুনারেশান অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট’। আইনে সরকারি বাসভবন ব্যবহারের সময়সীমাও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
এই আইনের সপ্তম ধারার পাঁচ নাম্বার উপধারায় বলা আছে, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা দায়িত্ব ছাড়ার পর এক মাস পর্যন্ত সরকারি বাসভবনে থাকতে পারবেন। এছাড়া কেউ যদি সরকারি বাসায় না থেকে নিজস্ব কিংবা ভাড়া বাড়িতে থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে দায়িত্ব ছাড়ার পর এক মাসের বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন।
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা হিসাবে কার্যত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, তাই তারাও এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
জানা গেছে, পদত্যাগ করা দুই উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা চলছে। এক্ষেত্রে আইন হলো, সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কেউ নির্বাচনি কার্যক্রম চালাতে পারবেন না।
পদত্যাগের পর যদি কেউ কোনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান, সেক্ষেত্রে সরকারি বাসভবনে থাকার মতো সুবিধাগুলো পাবেন না। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, যেকোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়া যায় না।