আ.লীগ সমর্থিত অধ্যক্ষকে হটিয়ে বৈধ অধ্যক্ষকে পদে বসালেন শিক্ষার্থীরা

অধ্যক্ষ মো. তৌহিদ হোসেন
অধ্যক্ষ মো. তৌহিদ হোসেন  © টিডিসি ফটো

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুখে সাভার মডেল কলেজে জোরপূর্বক অধ্যক্ষের পদে থাকা আলী হোসেনকে অপসারণের পর প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদ হারানো অধ্যক্ষ মো. তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (১৫ আগষ্ট) সকাল থেকে আ'লীগ সমর্থিত অধ্যক্ষ আলী হোসেনের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এর আগে বুধবার শিক্ষার্থীরা ২১ দফা দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন।

দুই দিনব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে আলী হোসেনকে পদ থেকে অপসারণের পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে আসেন আওয়ামী লীগের শাসনামলে অধ্যক্ষের পদ থেকে চাকরিচ্যুত মো. তৌহিদ হোসেন। এ সময় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। দীর্ঘদিন পর প্রিয় অধ্যক্ষকে প্রতিষ্ঠানে ফিরে পেয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান কলেজের শিক্ষক, কর্মচারীসহ বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

সাভার মডেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জেষ্ঠ্য শিক্ষক মনসুর আলী বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দখলের পায়তারা করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তারা ২৬ বছর ধরে দায়িত্বরত তৌহিদ হোসেনকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়। সম্প্রতি ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানে সেই সরকারের পতনের পর গত দুইদিন ধরে শিক্ষার্থীদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে প্রতিষ্ঠানকে আওয়ামী লীগের দখল মুক্ত করে মো. তৌহিদ হোসেনকে আবারো অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্ব গ্রহণের পর অধ্যক্ষ মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে সর্বপ্রকার বৈষম্য দূর করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। এই কলেজকে আজ বৈষম্যমুক্ত করতে যারা আন্দোলন করেছেন সেই শিক্ষার্থীদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ১৯৯৬ সালে মেধাবী ও আদর্শ মানুষ তৈরির স্বপ্ন নিয়ে সাভার মডেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গত কয়েক বছরের দখলদারিত্বের পর আজ এই প্রতিষ্ঠান বৈষম্যমুক্ত হলো। এখন থেকে আবারো এখানে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরে আসবে।

আন্দোকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে ছিল- অধ্যক্ষ আলী হোসেন, দর্শন বিভাগের হোসাইন মো. রানা‌ ও সমকামিতায় অভিযুক্ত ইসলাম শিক্ষা বিভাগের রমজান আলীকে বরখাস্ত করা। তাদের সহযোগী হিসেবে ল্যাব শিক্ষক আবু সাঈদ, ক্রীড়া শিক্ষক ফিরোজ আলম, বাংলা বিভাগের দিলারা খানম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মুস্তাফিজুর রহমান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের আমিনুল ইসলামের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া। কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, মিথ্যা মামলায় বরখাস্তকৃত পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক হাসান মাহমুদকে পুনর্বহাল, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ।

এছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শহীদ তানজির খান মুন্নার স্মরণে লাইব্রেরীর নামকরণ করা। স্বাস্থ্যসম্মত ক্যান্টিনের ব্যবস্থা। সাবেক ছাত্রলীগ পদধারীদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা। ছাত্র-শিক্ষক কল্যাণ তহবিল, বিভিন্ন ক্লাব, কলেজের ল্যাব ও লাইব্রেরী সংস্কার করা। এ্যালামনাই এসোসিয়েশন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, জেনারেটর, বিশুদ্ধ পানি, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষে সাউন্ড সিস্টেম, প্রজেক্টরের ব্যবস্থা'সহ কলেজকে সম্পূর্ণ ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতিমুক্ত রাখার দাবি জানানো হয়।

ছাত্রদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মনসুর আলী, গণিত বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বিল্লাল হোসেন, জীববিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাজমুন নাহার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাসুম সাঈদ। এসব দাবি আদায়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের পর গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে আন্দোলন করতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence