স্বাধীনতার ৫২ বছরেও অর্জিত হয়নি শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত গুণগত মান

স্বাধীনতার ৫২ বছরেও দেশের উচ্চশিক্ষাস্তর দক্ষ কাঙ্ক্ষিত মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছে না।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও দেশের উচ্চশিক্ষাস্তর দক্ষ কাঙ্ক্ষিত মানবসম্পদ তৈরি করতে পারছে না।  © ফাইল ছবি

স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে শিক্ষার পরিবর্তনের হিসেব দাঁড় করালে তাতে পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট। সহজবোধ্য হিসেবে লক্ষ্য করা যায় উন্নতির মাপকাঠিও। তবে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় শিক্ষার উন্নতি কাঙ্ক্ষিত মানের হয়নি বলে মনে করছেন দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। সরকারের দেওয়া হিসেব বলছে, দেশের বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ। আর বর্তমানে দেশে প্রায়োগিক সাক্ষরতার হার ৬২.৯২ শতাংশ।

স্বাধীনতার পাঁচ দশকের বেশি সময় পার হলেও ১৭ কোটির জনসংখ্যার দেশে সামগ্রিক গুণগত শিক্ষায় ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির হিসেব কতটা কাঙ্ক্ষিত—এমন প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর না থাকলেও আছে পরিসংখ্যান আর নানা হিসেব-নিকেশের মাপকাঠি।

দেশের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট খাতে উন্নতির মাপকাঠি বিচার করলে শিক্ষার পরিমাণগত উন্নতি হলেও গুণগত উন্নতি খুব বেশি হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও সরকার বর্তমানে প্রতিবছর বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিচ্ছে। এছাড়াও সরকার পিছিয়ে পড়া বা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিক্ষা নিশ্চিত করতে বৃত্তি ও উপবৃত্তিসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে।

আমাদের শিক্ষা থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়ার কারণ বর্তমানে ভাষা, সাহিত্য ও ইতিহাস পাঠকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ফলে বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতিতে পিছিয়ে যাওয়া, দক্ষতা উন্নয়নে পিছয়ে যাওয়া এবং শিক্ষার গুণগত মান অর্জনে আমরা পিছিয়েছিঅধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষা ধারাকে সামনে নিতে সরকারের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি উদ্যোগ থাকলেও তার খুব বেশি প্রভাব পরিবর্তন কাঠামোতে নেই; যা শিক্ষা থেকে সমাজ পাওয়া দরকার ছিল বা শিক্ষার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক কাঠামোয় পরিবর্তনের জন্য পাওয়া দরকার ছিল।

বর্তমানে দেশে শিক্ষা কেবলই চাকরি পাওয়ার মাধ্যমে পরিণত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে দেশে তারুণ্যের হতাশা আর বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতির বেহাল দশা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে আমাদের পাঠ্যক্রমে পড়ানো হচ্ছে বা জোর দেয়া হচ্ছে এমন সব বিষয়ে যাতে সহজে চাকরি পাওয়া যায়। ফলে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত গুণগত ফলাফল লাভ করা সম্ভব হচ্ছে না। সমাধন হিসেবে তারা দেখছেন, শিক্ষাকে গুণগত পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে কাজে আনার উদ্যোগী ভুমিকায় করণীয় নিয়ে।

দেশের শিক্ষাস্তরে উচ্চশিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে বেকারত্বও। ফাইল ছবি

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) তথ্য বলছে, বাংলাদেশে যুবগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ আর্থ-সামাজিক ঝুঁকির মধ্যে আছে। বৈষম্য আর গুণগত শিক্ষার অভাবে ৭৮ শতাংশ তরুণ মনে করেন—পড়াশোনা করে তাঁরা চাকরি পাবেন না। গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৯০ শতাংশ বলেও উঠে এসেছে একই গবেষণায়। এছাড়া চাকরি, পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণে নেই ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ। অর্থাৎ কেবল চাকরির জন্য শিক্ষা মাধ্যমের অঘোষিত যাত্রাও সাফল্য পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী দক্ষতার অভাবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে আমাদের গুণগত শিক্ষায়, নিশ্চিত করতে হবে মানসম্মত শিক্ষা। পাশাপাশি উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষার মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক বিন্যাসে। একইসাথে আমাদের ‘সফট স্কিল’ অর্থাৎ ন্যায়বোধ, মানবিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে হবে সবার মাঝে।

শিক্ষার হার বেশি মানে এটা নয় যে, সবাই তা আত্মস্থ করতে পেরেছে বা পারবে। শিক্ষার মানে হলে নিজেকে প্রকাশ করতে পারা, পড়তে পারা, মতামত প্রকাশ করতে পারা, সবকিছু আত্মস্থ করতে পারা। অর্থাৎ গুণগত শিক্ষা অর্জন করা। সেখানে আমাদের ঘাটতি আছে; এসব জায়গায় আমাদের অগ্রগতি দরকারড. কাজী খলীকুজ্জমান।

আমাদের সকল স্তরের শিক্ষা মাতৃভাষার মাধ্যমে হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিন্যাস কাঙ্ক্ষিত হয়নি বলে মনে করেন লেখক, প্রাবন্ধিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার গুণগত-মান আমরা বাড়াতে পারিনি; পরিমাণগত বাড়িয়েছি। এর নিদর্শন হলো যারা আমাদের শিক্ষা কারিকুলামে ত্রুটি রয়ে গেছে। এখানে যেমন ইতিহাসের চর্চা কমে গেছে; ইতিহাসকে কোনো গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। একই সাথে ভাষারও প্রভাব কমে গেছে।

‘‘আমাদের শিক্ষা থেকে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়ার আরেকটি কারণ বর্তমানে সাহিত্যকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। ইতিহাসের পাশাপাশি সাহিত্যকে গুরুত্ব না দেয়া আমাদের শিক্ষার জন্য খুব খারাপ হচ্ছে। এর ফলাফল হচ্ছে বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতিতে পিছিয়ে যাওয়া, দক্ষতা উন্নয়নে পিছয়ে যাওয়া’’—যুক্ত করেন অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

আরও পড়ুন: শিক্ষা এখন সামাজিক বিভাজনে সহায়তা করছে

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘বিশ্বজুড়ে তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রবণতা ২০২২’ (দ্য গ্লোবাল এমপ্লয়মেন্ট ট্রেন্ডস ফর ইয়ুথ) শিরোনামে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মহামারিকালে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে তরুণ বেকারদের সংখ্যা। তাদের তথ্য বলছে, দেশে তরুণদের মাঝে বেকারত্বের হার ১০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জাতীয় পর্যায়ে এ হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। 

দেশের সব শিক্ষাস্তরের শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির মাধ্যমের পাঠদান শুরু করা যায়নি। ফাইল ছবি

আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রতিবেদনের প্রাথমিক তথ্য-বিশ্লেষণ বলছে, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ তরুণ সংখ্যার হিসেবে যা ৩ কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৮১১। যাদের সবার বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছর।

আরও পড়ুন: স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে বৃদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি কতটুকু বেড়েছে?

বৈশ্বিক মহামারি, মন্দা, যুদ্ধসহ নানা কারণে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিনিয়ত তরুণদের লড়াই করে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। তথ্য বলছে, প্রচলিত ব্যবস্থায় বর্তমানে দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকার তরুণের সংখ্যা ২৭ লাখ। বিবিএসের জরিপ বলছে, দেশের বেকার তরুণদের মধ্যে সবাইই কর্মক্ষম বেকার। যদিও আইএলওর প্রতিবেদনে বলছে, দেশে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত মিলিয়ে মোট বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি। তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তুলে কর্মসংস্থান সৃষ্টিই বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ্য করে সংস্থাটি। 

এতে বড় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি পরোক্ষ অপচয় মেধা, সময় আর তরুণদের উদ্যমের—বলছেন দেশীয় শিক্ষা ও অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, এতে বর্তমান শিক্ষা মাধ্যম তরুণদের আশা বাঁচিয়ে রাখতে পারছে না। তথ্য বলছে, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, চায়না ৫০ বছর আগেও উন্নতির সূচকে বাংলাদেশের সমপর্যায়ে ছিল। আর কিউবা তাদের স্বাধীনতার পাঁচ বছরের মাথায় শিক্ষার হার শতভাগ নিশ্চিত করতে পেরেছে। তাহলে আমাদের যা পরিমাণগত বৃদ্ধির তাও মান বিচারে না হওয়ার পাশাপাশি সন্তোষজনক নয় চলমান পরিমাণের হিসেবেও।

জনমিতিক বিন্যাসে আমাদের তরুণদের মাধ্যমে আরও ২০ বছর কাজ করাতে পারবেন। এরপর সময়ের সাথে, সামাজিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে হলে অবশ্যই তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। সেজন্য আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা-ব্যবস্থাপক ও শিক্ষা প্রশাসকদের সামগ্রিক সচেতনতা বাড়াতে হবেঅধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ।

অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন চিন্তাবিদ ও জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার হার বেশি মানে এটা নয় যে, সবাই তা আত্মস্থ করতে পেরেছে বা পারবে। শিক্ষার মানে হলে নিজেকে প্রকাশ করতে পারা, অন্যের লেখা পড়তে পারা, নিজের মতামতকে প্রকাশ করতে পারা, সবকিছু আত্মস্থ করতে পারা। অর্থাৎ গুণগত শিক্ষা অর্জন করা। সেখানে আমাদের ঘাটতি আছে; সেসব জায়গায় বা খাতে আমাদের অগ্রগতি দরকার।

আমাদের শিক্ষার হার বেড়েছে, এখন আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার দিকে নজর দিতে হবে জানিয়ে ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, তা না হলে আগামীতে আমাদের বিভিন্ন খাতে যে দক্ষ জনশক্তি লাগবে তা পাওয়া যাবে না; এবং তা খুবই জরুরি তা না হলে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করা যাবে না। এখন আমাদের দক্ষতা উন্নয়ন দরকার, দক্ষ লোকবল দরকার। আর শিক্ষার ভিত শক্ত হলেই আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

উচ্চশিক্ষার পরও চাকরিতে প্রবেশ করতে না পারায় তারুণ্যের হতাশার পাশাপাশি রয়েছে প্রতিবাদও। ফাইল ছবি

পরিসংখ্যান মতে, পাঁচ দশকের একটি পরিণত বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। আর এ সময়ে আমাদের জনমিতিতে যে পরিবর্তন, তার সুফল পেতে আমাদের বর্তমান তরুণদের জন্য জন্য আশা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আমাদের সামাজিক ও আর্থিক কাঠামোয় শক্তিশালী ভিত দাঁড় করাতে হলে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বৃদ্ধি করতে হবে প্রচলিত দক্ষতারও। জনমিতিতে পরিবর্তন ও সময়ের সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বর্তমান প্রজন্মকে বর্তমান সময়ের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি দক্ষ হতে হবে।

দেশের শিক্ষা খাতের চলমান অবস্থার সমাধান হিসেবে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, আমাদের শিক্ষানীতিতে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে। বাড়াতে হবে ইতিহাসও সাহিত্যের মতো বিষয়গুলো; ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে হবে। যাতে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি তিনি মনে করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আমাদের দক্ষতা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় হয়নি। ফলে তরুণরা তাদের তুলনায় দক্ষতা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে আছে। তাদের দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করা দরকার; এসব বিষয়ে আমাদের শিক্ষানীতি ও সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন করা দরকার।

শিক্ষা শুধুমাত্র এনরোলমেন্ট দিয়ে দেখলে হবে না। আমাদের শিক্ষায় মান নিশ্চিত করতে হবে। মূল্যবোধকে সাথে নিয়ে আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। কাউকে রেখে কাউকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সমষ্টিগতভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবেফারাহ করিব।

আর ড. কাজী খলীকুজ্জমান পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, এখন ১৫-৩৫ বছরের মধ্যে আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৫২ মিলিয়ন, আর ১৫-২৯ এর মধ্যে ৪৫ মিলিয়ন যাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা শিক্ষা পায়নি। এরমধ্যেও যারা শিক্ষা পেয়েছে তাদের অনেকের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি হয়নি। যার কারণে দেশের বেসরকারি খাতে আমাদের দক্ষ জনবলের অভাবের সুযোগ নিয়ে পার্শ্ববর্তী ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশ আমাদের দেশ থেকে প্রায় ৫-৬ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। এখানে সামঞ্জস্য করা দরকার; দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার।

শিক্ষা অর্থনীতি বিযুক্ত নয়; শিক্ষা দেশপ্রেম বিযুক্ত নয় এবং বর্তমানে শিক্ষা তো কেবল জাতীয় ইস্যু না এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয় জানিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটি ও শিক্ষা আইন প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের আরও দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার, গতি বৃদ্ধি করা দরকার।

আরও পড়ুন: ‘শিক্ষায় আমরা সেভাবে পরিবর্তন আনিনি, আনার চিন্তাও করিনি’—এটা দুঃখজনক

তিনি বলেন, জনমিতিক বিন্যাসে আমাদের তরুণদের মাধ্যমে আরও ২০ বছর কাজ করাতে পারবেন। এরপর আপনি যদি সময়ের সাথে অর্থাৎ সামাজিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। সেজন্য আমাদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষা-ব্যবস্থাপক ও শিক্ষা প্রশাসকদের সামগ্রিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের সবার দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন করতে হবে বলে মনে করেন দেশের শিক্ষা ও শিক্ষক আন্দোলনের প্রবীণ এই নেতা।

পাঠ্যসূচির  বাইরে শিক্ষার্থীদের অভিযোজন উপযোগী করতে হবে পরিবর্তিত সামাজিক কাঠামোয়। ফাইল ছবি

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক অলাভজনক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাকশন এইড’-র বাংলাদেশে কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পঞ্চাশ বছরের উন্নতি, অর্জন অনেক জায়গায় হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই হয়েছে। আপনাকে দেখতে হবে উন্নতির সূচকগুলো কী। সামাজিক এবং মানসিক পরিবর্তনের সূচকে আমাদের উন্নতি হয়নি কাঙ্ক্ষিতভাবে। সেজন্য আমাদের সামষ্টিকভাবে কাজ করতে হবে। কারণ সমষ্টিগতভাবে কাজ না করলে মূল্যবোধ থাকে না, জবাবদিহিতা থাকে না; এটা কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর ছেড়ে দিলে হবে না।

শিক্ষার উন্নয়নে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে জানিয়ে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, শিক্ষায় শুধুমাত্র আমাদের অংশগ্রহণ (এনরোলমেন্ট) দিয়ে দেখলে হবে না। আমাদের শিক্ষায় মান নিশ্চিত করতে হবে। মূল্যবোধকে সাথে নিয়ে আমাদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। কাউকে রেখে কাউকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সমষ্টিগতভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে বলেও মনে করেন ফারাহ করিব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence