তরুণদের বাঁচাতে নাটক-চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য বন্ধের আহবান

তরুণদের বাঁচাতে নাটক-চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য বন্ধের আহবান
তরুণদের বাঁচাতে নাটক-চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্য বন্ধের আহবান  © ফাইল ছবি

টেলিভিশন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েবসিরিজে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোকে দিয়ে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন বন্ধের আহবান জানিয়েছে ধূমপান বিরোধী সংগঠন মানস। সোমবার (১৫ মে) মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা ‘র (মানস) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ আহবান জানান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, টেলিভিশন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত নাটক, চলচ্চিত্র, ওয়েবসিরিজে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোকে দিয়ে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানে প্ররোচিত করছে। এতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে; যা প্রধানমন্ত্রী’র ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ ঘোষণার সাথে সাংঘর্ষিক। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদেরকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।

ড. চৌধুরী বলেন, সুস্থ বিনোদনের অন্যতম চলচ্চিত্র, নাটক, ওয়েবসিরিজে নেতিবাচক দৃশ্য প্রচার (বিশেষত: ধূমপানের দৃশ্য) পরিহার করা উচিৎ। কারণ, মানুষ এগুলো অনুসরণ করে এবং বিশেষ করে আমাদের তরুণ সমাজ এর দ্বারা প্রভাবিত হয়। 

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নির্মাতা, শিল্পী ও কলা-কুশলীদেরকে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রচার করা অত্যন্ত জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, বিধি লঙ্ঘন করে ইতোপূর্বে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, নাটক ও প্রামাণ্যচিত্র সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নতুন করে নির্মিত ছাড়পত্র না দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও সাম্প্রতিককালে নির্মিত ও প্রচারিত বিভিন্ন চলচ্চিত্র, নাটক, ওয়েবসিরিজে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। সম্প্রতি, ‘প্রিয়তমা’ ও ‘এক রাতের গল্প’ সিনেমার পোস্টারে এবং ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার টিজারে জনপ্রিয় অভিনেতাদের মাধ্যমে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। 

আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা ও বিধি তোয়াক্কা না করেই অনেক নির্মাতা চলচ্চিত্র বা নাটক নির্মাণ ও সম্প্রচার করছেন, যা আমাদের তরুণ সমাজকে মাদকাসক্তির শিকার বানাচ্ছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি—বলে মনে করেন এই অধ্যাপক।

প্রসঙ্গত,  জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতিতে তামাকের আগ্রাসন রোধে ২০০৫ সালে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ও ২০০৬ সালে সংশ্লিষ্ট বিধি প্রণয়ন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। 

‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ (২০১৩ সালে সংশোধিত) ধারা-৫ (ঙ) অনুসারে, বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত বা লভ্য ও প্রচারিত, বিদেশে প্রস্তুতকৃত কোন সিনেমা, নাটক বা প্রামাণ্যচিত্রে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মঞ্চ অনুষ্ঠান বা অন্য কোন গণমাধ্যমে প্রচার, প্রদর্শন বা বর্ণনা করিবেন না বা করাইবেন না-  মর্মে বলা হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ