আক্ষেপ আর সংকট নিয়েই বাইশে পদার্পণ করলো বশেমুরবিপ্রবি 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে যথাযথ গুরুত্ব প্রদানসহ, পঠন-পাঠন ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি এবং উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষে ২০০১ সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে পাস হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন। কিন্তু এরপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে প্রায় ১০ বছর বন্ধ ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম। পরবর্তীতে ২০১১ সাল থেকে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম। তবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পর প্রায় ১১ বছর পার হলেও এখনও একাডেমিক ও প্রশাসনিক খাতে সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার পদ থাকলেও বিগত ১১ বছরেও কোনো উপ-উপাচার্য কিংবা ট্রেজারার নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। এমনকি শূন্য রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার, হিসাব দপ্তরের পরিচালক, পরিকল্পনা ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক এবং গ্রন্থাগারিকের পদও। 

শুধুমাত্র প্রশাসনিক খাতে জনবলের অভাবই নয় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে তীব্র শিক্ষক সংকটও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩টি বিভাগে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে অধ্যাপক রয়েছে মাত্র ২ জন এবং শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩০০। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতের ব্যবধান সর্বোচ্চ।

এসবের পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়টির অন্যতম প্রধান সমস্যা অবকাঠামোগত সংকট। প্রায় ১১ বছর পার হলেও এখনও প্রধান ফটক নির্মিত হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টির। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে আবাসন সুবিধার উল্লেখ থাকলেও পাচ্ছেন আবাসন সুবিধা মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী৷ ল্যাব সংকট রয়েছে প্রায় ১৫টি বিভাগে। এছাড়া, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের অভাব, ভবন থাকলেও ক্যাফেটেরিয়া চালু না হওয়া, টিএসসি না থাকা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে একাডেমিক ও প্রশাসনিক খাতে বিভিন্ন সংকট থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়কে আশার আলো দেখাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যায়নরত রয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা সফলতা দেখাচ্ছেন গবেষণা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়ও।

বিশ্ববিদ্যালয়েরের বিভিন্ন সংকটের বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, ‘এখানে যোগ্য লোক পাওয়া কঠিন। আমি যোগদানের পরপরই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছিলাম। আশা করছি শীঘ্রই এসকল পদে আমরা দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান করতে পারবো। এছাড়া ট্রেজারার নিয়োগ এবং অধ্যাপক সংকট নিরসনের বিষয়েও ইউজিসির সাথে কথা বলেছি। হয়তো ট্রেজারার আমরা শীঘ্রই পাবো। আর অধ্যাপক সংকট নিরসনে আমি একটি প্রস্তাব দিয়েছি। ইউজিসি প্রস্তাবটি পজিটিভলি নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের কয়েকটি বিভাগও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মাধ্যমে ক্লাস নেয়া শুরু করেছে।’

২২ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে প্রত্যাশার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘যোগদানের পরে অনেক প্রত্যাশার কথাই জানিয়েছিলাম। তবে প্রত্যাশা এবং বাস্তবতার পার্থক্য বিস্তর। তাই প্রত্যাশার কথা বলতে চাচ্ছি না।’

প্রসঙ্গত, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঁচটি বিভাগ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছিলো বশেমুরবিপ্রবি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৭ টি অনুষদের অধীনে ৩৩টি বিভাগে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নরত রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence