অধ্যাপক ফরিদের পদত্যাগ চান না ৩৪ ভিসি

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ চান না ৩৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। শনিবার (২২ জানুয়ারি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের এক সভায় এ নিয়ে আলোচনা করেন তারা। সভায় অধ্যাপক ফরিদের পক্ষে অবস্থান নেন বাকী উপাচার্যরা। উপাচার্যরা মনে করেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন যোগাচ্ছে।

দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫০টি। সভায় ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এতে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদও। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বর্তমান সভাপতি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রতিনিধি দলের সাথে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনির সঙ্গে দেখা করেন।

আরও পড়ুন- শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে শাবিপ্রবির আন্দোলন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি

সভায় অংশ নেয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়েই সভা ডাকা হয়েছিলো। ভার্চুয়ালি আমরা সেখানে যুক্ত হই। সভায় সব উপাচার্যরা অধ্যাপক ফরিদের পক্ষে অবস্থান নেই। ৩৪ ভিসি পদত্যাগের বিষয়টি একটি সেন্টিমেন্টাল আলোচনা ছিলো। এর বাইরে আর কিছুই না। তিনি বলেন, আমরা উপাচার্যরা সরকারের প্রতিনিধি। আমরা সরকারের ওপর আস্থাশীল। একযোগে পদত্যাগের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এ বিষয়ে সভায় কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি। এটি সেন্টিমেন্টাল বিষয় হিসেবেই রয়েছে।

আরও পড়ুন- শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে মন গলেনি শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

ড. আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ তো শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছিলেন। তারপরও কেন তার পদত্যাগ চায় শিক্ষার্থীরা? আমরা যদি ঘটনাপ্রবাহ দেখি তাহলে দেখতে পাই, আন্দোলনের একদিনের মধ্যেই ছাত্রীদের সব দাবি মেনে নিয়েছিলেন উপাচার্য। নতুন প্রভোস্টও নিয়োগ দিয়েছিলেন। এরপরও দেখি আন্দোলন চালিয়ে গেছে শিক্ষার্থীরা। বাসভবনের সামনে অধ্যাপক ফরিদকে ধাওয়া দেয়া হয়েছিলো। আইসিটি ভবনে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গায়ে হাত তুলেছে আন্দোলনকারীরা। এবিষয়গুলো গ্রহণযোগ্য নয় বলে আমরা সভায় বলেছি।

একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের রাবার বুলেট, টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেণেড নিক্ষেপের বিষয়টি নিয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, সেখানে আমরা সবাই বলেছি এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি। তবে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো সেটার ভালো একটা তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি তৃতীয় কোন একটি পক্ষ এই আন্দোলনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। এটা সরকার তার গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। 

আরও পড়ুন- শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের গণ অনশন শুরু

সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে এই উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছি। তার পাশে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া আমাদের একটা প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।

এদিকে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ চায় না সরকারও। সূত্র জানায়, আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এর সমাধান চায় সরকার।  

শিক্ষক প্রতিনিধি দলের সাথে সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অ্যাকশনের কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হচ্ছি একই সঙ্গে শিক্ষককে যে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে সেখানে কেন আমরা চুপ থাকছি? শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই মিলেই তো বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তৃতীয় পক্ষ আছে কিনা সেটি দেখতে হবে। সব সমস্যার সমাধানের অন্যতম পথ আলোচনা। আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ