কুচিয়া মাছ নিয়ে গবেষণা

বৈজ্ঞানিক পোস্টার প্রদর্শনে চ্যাম্পিয়ন নোবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী

বৈজ্ঞানিক পোস্টার প্রদর্শনে চ্যাম্পিয়ন নোবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী
বৈজ্ঞানিক পোস্টার প্রদর্শনে চ্যাম্পিয়ন নোবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

বিভিন্ন ঘনত্বে কুচিয়া চাষের উপযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশী গবেষকদের করা সমন্বিত গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল অফ জুয়োলজিতে। গবেষণাটি প্রদর্শন করে এক বৈজ্ঞানিক সভার পোস্টার প্রদর্শন ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থী ড. এম শাহানুল ইসলাম।

ড. এম শাহানুল ইসলাম নোবিপ্রবি ফিশারজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২২ জুন) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান ক্লাব আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সভার পোস্টার প্রদর্শনীতে গবেষণাটি তুলে ধরেন ড. শাহানুল।

এই গবেষক জানান, প্রকৃতিতে আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে কুচিয়া মাছ। যার রপ্তানিমূল্য অনেক। তাই প্রায়োগিক চাষের মাধ্যমে মৎস্যচাষীদের অর্থনৈতিক সুদিন এবং অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করে এই মাছ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অগ্রগতি তরান্বিত করতেই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও কৃত্রিম চাষ বৃদ্ধি পেলে প্রকৃতিতে কুচিয়া মাছের সংখ্যাও বেড়ে যাবে। ফলে এই মাছ সংরক্ষণেও কাজে লাগবে আধা-নিবিড়ভাবে সম্পন্ন এই গবেষণাটি।

ঘনত্বে অনুসারে কুচিয়ার চাষ অর্থনৈতিক ভাবে কেমন লাভজনক তা খতিয়ে দেখা হয় গবেষণায়। এতে উঠে আসে বেশি ঘনত্বে (হেক্টরে ২০ হাজার পোনা) কুচিয়া চাষ করলে মাছের পরিমাণ, আয় বাড়লেও মাছের আকার ছোট হয় এবং দেহ বৃদ্ধির হারও কমে যায়। অন্যদিকে কম ঘনত্বে চাষ করলে কুচিয়া মাছ বেশ বড় হয় এবং বিক্রির পর বিশ্লেষণ করে দেখা যায় মাছপ্রতি লাভের পরিমাণও বেড়েছে। এজন্য প্রতি হেক্টরে ৯-১০ হাজারের বেশি পোনা ছাড়া ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন গবেষণা দলটির মুখ্য লেখক স্বপন কুমার বসাক।

কুচিয়া মাছের নাম শোনেনি এমন মানুষের সংখ্যাও দেশে অনেক। কুঁচে বা কুইচ্চা নামেও পরিচিত সর্পিলাকার লম্বা এই মাছটি। বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, পাকিস্তান ও মায়ানমারের কিছু অংশে মাছটি পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ততটা জনপ্রিয় সুখাদ্য মাছ না হলেও দেশের বাইরে রয়েছে এর অপার সম্ভাবনা।

জানা যায়, ভারতে ১৯৭৭ সালে কুচিয়ার রক্তের বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করা হয়। এরপর ১৯৮৯ সালে কোলকাতা হতে কুচিয়া সুইডেনে নিয়ে দেখা হয় এর শ্বসনতন্ত্রের গঠন। ২০০০ সালের দিকে মাছটিকে বিপদাপন্ন ঘোষণা করে প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন (IUCN)। তাই এই মাছটি সংরক্ষণে গবেষণা হয়ে পড়ে অপরিহার্য।

বাংলাদেশের গবেষণা মহলেও শুরু হয় এই মাছ নিয়ে প্রাথমিক চিন্তা ভাবনা। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে ২০০৩ সালে কুচিয়ার উৎপাদনের উপর বিভিন্ন খাবারের প্রভাব পরীক্ষা করে দেয়া হয়। একই সালে বাকৃবিতে কুচিয়ার উৎপাদনের উপর বিভিন্ন বাসস্থানের যেমন- কাদা, কলমির ঝোপ, পিভিসি পাইপ, কৃত্রিম পুকুরের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়।

এছাড়া ২০০৫ সালে কুচিয়ার শরীরবৃত্ত্বীয় বৃদ্ধির উপর তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে গবেষণা চলে। ২০০৮ সালে ঢাবিতে কুচিয়ার জীবতত্ত্বের উপর চলে গবেষণা। এতে দেখা হয় কুচিয়া মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন এবং এর পোনার শরীরবৃত্তীয় বৃদ্ধির ধরণ। ২০১০ সালে উত্তরবঙ্গের উপজাতিরা কুচিয়া চাষের পদ্ধতির উপর গবেষণা চালায়। এরপর ২০১২ সালে নোয়াখালিতে কুচিয়া মাছের বিপণন ও রপ্তানির বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা করা হয় এবং ২০১৫ সালে শাবিপ্রবিতে কুচিয়া মাছের গৃহস্থালি চাষ পদ্ধতির উপর গবেষণা চালানো হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence