আবরার হত্যাকাণ্ড

স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া ছাত্রলীগ নেতা অনলাইন ক্লাসে, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

আশিকুল ইসলাম বিটু ও আবরার ফাহাদ
আশিকুল ইসলাম বিটু ও আবরার ফাহাদ  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন বা স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। তার একজন কেমিক্যাল’ ১৬ ব্যাচের আশিকুল ইসলাম বিটু। তিনি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকও।

সম্প্রতি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অনলাইন ক্লাসে বিটু যোগদান করেছেন বলে খবর পাওয়া গেলে তা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাকে বহিষ্কার করতে আজ সোমবার (২৪ মে) বুয়েটের ভিসি বরাবর চিঠিও দিয়েছেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, আজীবন বহিষ্কারাদেশ থাকা সত্ত্বেও কোর্টের স্টে অর্ডার নিয়ে কিভাবে সে ক্লাস করতে তা আমাদের বোধগাম্য নয়। আমরা ভিসি স্যারকে এ নিয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি যে, আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে তাকে বহিষ্কার করতে। তা না হলে ৩০ মে থেকে ক্লাস বর্জন করা হবে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী৷ এরপর ডিসেম্বরের ১ তারিখে এ ঘটনায় করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বুয়েটের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন ২৬ জন শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্য মতে, আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বুয়েট থেকে আজীবন বহিষ্কৃত আশিকুল ইসলাম বিটু গত শনিবার (২২ মে) কেমিকৌশল’১৭ ব্যাচের একটি কোর্সের অনলাইন ক্লাসে ক্লাসে জয়েন করে। 

বহিষ্কারের পর কোর্টের স্টে অর্ডার নিয়ে এটিই তার প্রথম ক্লাস। এরপর শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ও বয়কটের মুখে তিনি আর ক্লাসে জয়েন করেনি।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফের ক্ষোভ দেখা দেয়। প্রাথমিক প্রতিবাদ হিসেবে বুয়েটের রানিং ব্যাচের সব শিক্ষার্থী তাদের অফিসিয়াল জুম এবং টিমস অ্যাকাউন্টে ‘খুনির সঙ্গে ক্লাসে অংশগ্রহণ নয়’ লেখা সংবলিত প্রোফাইল পিকচার দিয়ে আজকের ক্লাস করেছে; যেন সব শিক্ষকের কাছে এ বিষয়টি পৌঁছে যায়।

এদিকে, বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হওয়া ছাত্রকে কেন অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করবে এবং তার ফের বহিষ্কার চেয়ে আজ ভিসি বরাবর চিঠি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের সব ব্যাচের পক্ষ থেকে দেয়া এই চিঠিতে আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে তাকে বহিষ্কার করতে দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে ৩০ মে থেকে অনলাই ক্লাস বর্জন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, দ্রুত এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখা না দিলে আগামীতে ক্লাস বর্জনসহ আরও কঠিন পদক্ষেপের দিকে আগাতে পারি। তবে আমরা সব ব্যাচ থেকে ভিসিকে আপাতত শুধু একটা চিঠিই দিয়েছি। চিঠিকে আমরা একটা আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে তাকে বের (বহিষ্কার) করা না হলে বুয়েটে ক্লাস বর্জন করা হবে।

আরেক শিক্ষার্থী জানান, আজকে সকালে একটা চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে বিটুকে বহিষ্কার করতে হবে উল্লেখ রয়েছে। তা না করলে ৩০ তারিখ থেকে ক্লাস বর্জন হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে বুয়েটের ভিসি ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টাকে বারবার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেন নি।


সর্বশেষ সংবাদ