নোবিপ্রবির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- আব্দুল কবীর ফারহান, নোবিপ্রবি
- প্রকাশ: ২৪ মে ২০২১, ০৮:০৬ AM , আপডেট: ২৪ মে ২০২১, ০৯:১৭ AM
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক আরোপিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বিরুদ্ধে সকল প্রকার নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাবেক উপাচার্যের শেষ সময়ের দিকে নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু অনিয়মের কারণে দেওয়া এই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল দীর্ঘ দুই বছর। এখন সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় নিয়োগ নিয়ে আর কোনো বাধা থাকছে না।
জানা গেছে, গত ২০ মে (বৃহস্পতিবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে নোবিপ্রবির সকল ধরনের নিয়োগের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৩ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের নিয়োগের অনিয়ম তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি কিছু সুপারিশ করে। তার কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে মন্ত্রণালয় নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শর্তাবলি পুরোপুরি অনুসরণ করে তারা ভবিষ্যতে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো দিদার-উল-আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে মন্ত্রণালয় নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কিছু নিয়ম-কানুন বেঁধে দিয়েছে। সে সব নিয়ম অনুসরণ করেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য।
তিনি বলেন, ‘সততা বজায় রেখে সুন্দরভাবে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। আইনের পুঙ্খানুপুঙ্খুভাবেভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে চাই।’ উপাচার্য বলেন, ‘নীতির বাইরে গিয়ে কোন প্রকার নিয়োগ বা এ সংক্রান্ত কোন অনিয়ম করার পক্ষে আমি নই।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ছে, ঘোষণা আসতে পারে কাল
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের এপ্রিলের শেষের দিকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামানের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নোবিপ্রবিতে সকল প্রকার নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দীর্ঘদিন ধরে বহাল থাকা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার ফলে অনিশ্চয়তায় কাটাচ্ছিলেন ৬০ এর অধিক শিক্ষক এবং প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
দুই বছরের অধিক সময় পার হলেও অস্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক এবং মাস্টার রোলে নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরী স্থায়ীকরণ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের পরে স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত জুনিয়ররাও পদোন্নতি পেয়ে পদমর্যাদায় অস্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের ওপরে অবস্থান করছেন। এছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের একাডেমিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এর আগে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দাবিতে ২০২০ সালে টানা ৭৫ দিন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে সকল প্রকার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পরবর্তীতে উচ্চ মহলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতিতে শিক্ষকরা একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরেন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।