আবরার হত্যার ১ বছর: ধরা ছোয়ার বাইরে ৩ আসামি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৮:১৬ PM , আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০, ০৩:২৯ PM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার এক বছর আজ (৬ অক্টোবর)। ২০১৯ সালের এইদিন রাতে বুয়েটের শেরে-বাংলা হলের নিজ কক্ষে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। এ ঘটনার এক বছর হলেও আসামিদের মধ্যে এখনও তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
পলাতক তিন আসামি হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃঞ্চপদ রায় বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যায় কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। ২১ আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। একজন আত্মসমর্পণ করেছেন। বাকিদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। কোথাও লুকিয়ে থেকে লাভ হবে না। ধরা পড়তেই হবে।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর এ মামলার ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। পরে ১৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা অনুযায়ী গ্রেফতার করতে না পারায় গত ৩ ডিসেম্বর তাদের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। ৫ জানুয়ারির মধ্যে ক্রোকের পরোয়ানা তামিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এরপর গত ৫ জানুয়ারি পলাতক আসামিদের হাজিরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের আগের দিন মোর্শেদ অমত্য ইসলাম নামে পলাতক এক আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ছয়জন। তদন্ত চলাকালে মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু। এর মধ্যে ছাত্রলীগ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি। এদের মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের বছরের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে-বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উশৃঙ্খল কর্মীর হাতে নির্দয় পিটুনির শিকার হয়ে মারা যান বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর এই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানি শুরু হয়। সেদিন এ মামলায় গ্রেফতার ২২ আসামির মধ্যে ১৩ জনের পক্ষে অব্যাহতির আবেদনের ওপর শুনানি হয়। আর ৯ সেপ্টেম্বর বাকি ৯ আসামির আইনজীবী অব্যাহতির আবেদনের উপর শুনানি করেন।