ঈদে আনন্দ নেই, আমাদের চারপাশ কেবলই ধ্বংসস্তুপ
আম্ফান তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
- ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া
- প্রকাশ: ২৩ মে ২০২০, ০৯:২৮ PM , আপডেট: ২৩ মে ২০২০, ১০:৪০ PM
‘‘আগামীকাল অথবা পরশু হয়তো ঈদ, কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো আনন্দ নেই। কারণ আমাদের চারপাশে এখন কেবলই ধ্বংসস্তুপ, অনেকের ঘরের চাল নেই, থাকার মত জায়গা নেই। ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, রাস্তার দুপাশ জুড়ে ভাঙা গাছ পড়ে আছে’’ কথাগুলো বলছিলেন আম্ফানে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরার সানাউর রহমান সানি।
সানি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শুধুমাত্র এই শিক্ষার্থীই নন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের নিকট দেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতক্ষীরার চার শিক্ষার্থীর বক্তব্যেই উঠে এসেছে একই চিত্র।
ঈদ-উল-ফিতর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলেও করোনা মহামারী আর ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাব ম্লান করে দিয়েছে এই জেলার মানুষের ঈদ আনন্দ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইয়য়াসি আলম বলেন, ‘আমাদের চারপাশের গ্রামগুলো পানিতে ডুবে গেছে। ফসলের ক্ষেত এবং চিংড়ির ঘেরগুলো মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এর ফলে প্রতিবছর ঈদ আমাদের জন্য উৎসবের উপলক্ষ হয়ে আসলেও এবারের ঈদে কোনো আনন্দ নেই। এই ধ্বংসস্তুপের মাঝে ঈদের দিনটা আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতই কাটবে।’
লোকপ্রশাসন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ঝড়ে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। আমের বাগানগুলো পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আর এর সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি। সবমিলিয়ে আমরা এখন খুব খারাপ সময় পার করছি। এই সময় ঈদ আমাদের জন্য কোনো আনন্দের উপলক্ষ হবেনা।
একই অবস্থার কথা উল্লেখ করে এ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, এই সময়ে আমাদের এইদিককার কৃষকরা সাধারণত নতুন ফসল ঘরে তোলে। কিন্তু আম্পান সবকিছুই নষ্ট করে দিয়েছে। আমাদের এলাকার কারোরই এখন আর ঈদ উদযাপনের মানসিকতা নেই।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২০ মে) ১৪৮ কিলোমিটার বেগে সাতক্ষীরায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এতে দুইজন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে প্রায় ২২ হাজার ৫১৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও ৬০ হাজার ৯১৬টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।