ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় যবিপ্রবি প্রশাসনের মামলা, অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
- যবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৩ PM , আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৩ PM
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা-তীব্র প্রতিবাদ ও সংঘর্ষের পর অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় অভিযুক্ত যুবক মো. মোনায়েম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) এ মামলার পর মোনায়েমকে আদালতে চালান করা হয়েছে।
মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের উপপরিদর্শক দেবাশীষ হালদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উপপরিদর্শক দেবাশীষ হালদার বলেন, ‘ইভটিজিংয়ে অভিযুক্ত মো. মোনায়েম হোসেনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি এবং কোর্টে চালান করে দিয়েছি। এখন তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২৪ নভেম্বর রাত আটটার দিকে শিক্ষার্থীরা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস মেরামতের কাজে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানাধীন আমবটতলা এলাকার ‘মোনায়েম টেলিকম’ দোকানে যান। দোকানে ভিড় থাকার কারণে তারা নিজেরাই ডিভাইস খুলতে থাকেন। একপর্যায়ে একজন ছাত্রীর হাত সামান্য কেটে গেলে দোকানদার অভিযুক্ত মোনায়েম তার হাত স্পর্শ করেন। ছাত্রীরা এ আচরণের প্রতিবাদ জানালে তিনি ‘ওষুধ লাগানোর চেষ্টা’ করার অজুহাত দেন। এতে বিব্রত হয়ে ছাত্রী তার হাত সরিয়ে নেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, কাজ শেষে দোকান থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় দোকানদার মোনায়েম ছাত্রীদের উদ্দেশে অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। পরে ছাত্রীরা বিষয়টি তাদের ক্লাসের বন্ধুদের জানালে রাইয়ানুল ইসলাম, মেহনাজ মুনিব তন্ময়, আব্দুল্লাহ আল জোবের, সাব্বির আহম্মেদ, ইয়াছিন আরাফাত শেখ, রাতুল হাসানসহ অন্যান্য শিক্ষার্থী দোকানে গেলে অভিযুক্ত মোনায়েম তাদের হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে প্রায় ২৭ জন শিক্ষার্থী, তিন সাংবাদিক ছাড়াও কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হন। গুরুতরভাবে জখম হন আইপিই বিভাগের রোহান, গণিত বিভাগের তানজিল আল ফাহিম, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহাদ সৈকতসহ আরও অনেকে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় সাংবাদিক সাব্বিরের সাইকেল।
পরে রাতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারসহ কয়েক দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটিমে রাত ১টা ৩০ মিনিটে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উপাচার্য ছাড়া পান। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত সকল শিক্ষার্থীর চিকিৎসা খরচ বহনের আশ্বাস দেওয়া হয়।