১০ দফা দাবিতে চুয়েট পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

১০ দফা দাবিতে চুয়েট পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
১০ দফা দাবিতে চুয়েট পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) জীবাশ্ম জ্বালানি ও খনিজ খনন প্রকৌশল (পিএমই) বিভাগের সংস্কারের দাবি তুলেছে একই বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপর ১২টায় শিক্ষার্থীরা দশ দফা দাবি নিয়ে ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক কাজী আফজালুর রহমান এর উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলিং কক্ষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে সভা আয়োজন করা হয়, সেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি সমূহ পেশ করে। এসময় পিএমই বিভাগের চলমান সকল ব্যাচের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থীরা তাদের দশ দফা দাবি তুলে ধরেন এবং এ সকল দাবির দ্রুত সমাধান চান।

দাবি সমূহ হলো, দুর্নীতি এবং অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত থাকায় পিএমই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়ার পদত্যাগ নিশ্চিত করা, ডিফেন্স বোর্ডে শিক্ষকদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত কার্যকর করা, থিসিসের ডাটা ও রিসোর্সের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এক্সেস, শিক্ষক নিয়োগ এবং গবেষণায় এক্সেস প্রদান, রাস্তা এবং ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা, বিভাগের একাডেমিক সিলেবাস সংস্কার,বিভাগীয় ভবন সংস্কার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিট ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন, ল্যাব ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি এবং বৈষম্যবিরুধী ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্য বিরুধীতা এবং সন্ত্রাসি কার্যক্রমে জড়িত থাকায় ঐ বিভাগের শিক্ষার্থী আজহারুর ইসলাম মুন্নাকে পিএমই বিভাগ থেকে বহিষ্কার করা।

এসময় কাউন্সিলিং কক্ষে উপস্থিত শিক্ষকগণ দাবি সমূহ শুনেন এবং কিছু দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেন এবং বাকি দাবি সমূহ দ্রুত সময়ের মাঝে বাস্তবায়নে আশ্বস্ত করেন।

এ বিষয়ে যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক কাজী আফজালুর রহমান বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সাথে বসেছি তাদের দাবি সমূহ শুনেছি তারপর আমি পিএমই বিভাগের শিক্ষকদের সাথে বিকাল তিনটায় একটি মিটিং এর আয়োজন করি এতে কিছু দাবির তাৎক্ষণাত সমাধান হয়েছে এবং ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় যে বাকি একাডেমিক বিষয়গুলো সমাধানের জন্য বিভাগীয় প্রধান শিক্ষার্থীদের সাথে বসবেন এবং বিষয়গুলা যেভাবে সমাধান করলে ভালো হয় সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে আমাকে সাহায্য করবেন। পাশাপাশি প্রশাসনিক যে বিষয়গুলো এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে উপাচার্য এবং উপ- উপাচার্য সহ প্রসাশনিক কমিটি গঠিত হলে তখন আমরা সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় উপস্থিত ছিলাম এবং দাবিগুলো শুনেছি। সেখানে একাডেমিক যে দাবিগুলো ছিল এগুলো ডিন মহোদয় বিভাগীয় প্রধানের সাথে সমন্বয় করে সমাধান করবেন। বাকি প্রশাসনিক বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশন পুনর্গঠিত হলে প্রশাসনিক বিষয়গুলো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পিএমই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সানাউর রাব্বি পাবেল বলেন, আমরা পিএমই বিভাগের শিক্ষকগণ ডিন মহোদয়ের সাথে আলোচনা করেছি এবং আগামীকাল বিকাল ২ টা ৩০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসবো এবং যে বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান সম্ভব সেগুলো সমাধান করে বাকি বিষয়গুলো কিভাবে সমাধান করা যায় সেই বিষয় আলোচনা করবো৷ আমরা চাই শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করতে যাতে তারা ৮ সেপ্টেম্বর থেকেই নিয়মিত ক্লাস শুরু করতে পারে।

পিএমই বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলিফ হোসেন জানান, আমাদের ১০ দফা দাবি নিয়ে আজ রেজিস্ট্রার স্যার এবং ডিন স্যারের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ডিপার্টমেন্টের সংস্কারমূলক দাবিগুলোর পাশাপাশি, আমাদের প্রধান দাবি ছিল ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়ার পদত্যাগ। তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত গুরুতর অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব রাখি। রেজিস্ট্রার স্যার এবং ডিন স্যার উক্ত বিষয়ে বিভাগীয় শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদেরকে আগামীকাল বিভাগের শিক্ষকগণ আলোচনার জন্য ডেকেছেন। আমরা ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি আমাদের সকল দাবি পূরণ না হয়, তবে পিএমই বিভাগের সকল ব্যাচ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করবে এবং ওইদিন বিভাগে তালা দেওয়া হবে।

অপরদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মোহাম্মদ ইসলাম মিয়া টিডিসিকে বলেন, চুয়েটে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে ভালো সম্পর্ক আগেও ছিলো এখনও আছে। হতে পারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা শিক্ষক শিক্ষার্থীরা আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করবো।

এছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আমি বিস্তারিত মন্তব্য করবো না। তবে এ বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করবো। এ বিষয়টি আসলে কোনো ভুল বুঝাবুঝির ফলাফল কিনা বা অন্য কেউ এতে জড়িত আছে কিনা এ বিষয়টি আগে যাচাই করে দেখতে হবে। তবে আমি শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে যাবো এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই নাই। এরপর ও যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে একটি সুযোগ দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

উল্লেখ্য ,পিএমই বিভাগের প্রাক্তন নারী শিক্ষার্থীদের অনেকে তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence