নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১১:০০ AM , আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪, ১১:১০ AM
মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটে) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের ঘটনার জেরে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৩০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নিয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাসে ও ছাত্রলীগের নেতাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশের সহযোগিতাকারীদের বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
এদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় অভিযুক্ত ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রহিম ওরফে ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এসে এ তথ্য জানান।
২৯ মার্চ রাতে অভিযুক্তের হলের সিট বাতিলের বিষয়ে কথা বলছেন ভিসি
এসময় তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করা হবে। আর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হলে সেটা ডিসিপ্লিন কমিটিতে যাবে। সেখান থেকে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ নোটিশ) দেওয়া হবে এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের পথ সুগম হবে।
রাত ৯টার পর বুয়েটের রেজিস্ট্রার (অ. দা) অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্তপূর্বক সুপারিশ প্রদান করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় বুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ. দা) অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর টার্ম/সেমিস্টার ফাইনালসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকবে—বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের আগমনকে কেন্দ্র করে বুয়েট শিক্ষার্থীরা নতুন করে আন্দোলনে নামেন। এসময় ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধে ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আমরা বুয়েটের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২৮ মার্চের মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ রাব্বি এর বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল বাতিল এর দাবি জানাচ্ছি।
২. উক্ত ঘটনায় ইমতিয়াজ রাব্বির সাথে বুয়েটের বাকি যেসকল শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার চাই।
৩. বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তারা কেন, কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট সদুত্তর এবং জবাবদিহিতা বুয়েট প্রশাসন কর্তৃক আসতে হবে।
৪. উপরোক্ত ১নং এবং ২নং দাবি আগামীকাল সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ডিএসডাবলু এর পদত্যাগ চাই।
৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনাল সহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি
৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোন রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না- এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। নিরাপদ ক্যাম্পাস এর নিশ্চয়তা, রাজনীতিবিহীন পরিবেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা বজায় রাখা সম্পূর্ণরুপে বিঘ্নিত হয়েছে ২৮ মার্চ মধ্যরাতের প্রবেশের অনুমতি পাওয়ার মাধ্যমে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সর্বদা বিরোধী।