পাবিপ্রবির নিম্নমানের ইন্টারনেটে কচ্ছপ গতি, অনেক রাউটারও অকেজো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ধীরগতি আর নিম্নমানের ইন্টারনেট সংযোগের ফলে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলগুলোতে পর্যাপ্ত সংযোগ থাকলেও তা ধীরগতি সম্পন্ন হওয়ায় সেখানেও দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তাদের। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা নেই। শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমন ধীরগতি বলে মনে করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় হবে আরও স্মার্ট। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই সেবা এখনও ধীরগতির। হলের বিভিন্ন স্থানের অনেক রাউটার অকেজো হয়ে পড়ে আছে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কচ্ছপ গতির এমন ইন্টারনেট সেবা চান না। ইন্টারনেট সমস্যার সমাধানে বারবার দাবি জানিয়ে আসলেও প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয় না বলে অভিযোগ তাদের।

আমরা একাডেমিক ভবনসহ হলগুলোতে ওয়াইফাই সেবার যথেষ্ট সংযোগ দেয়ার চেষ্টা করেছি। তবে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক সময় গতি কমে যায়। -কর্তৃপক্ষ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী ইমন সরকার বলেন, হলের ওয়াইফাইয়ের যে মেইন স্টেশন আছে সেখান থেকে সব রুমে ওয়াইফাই কানেকশন পাওয়া যায় না। কারণ বেশিরভাগ কক্ষই প্রধান স্টেশনের রেঞ্জের বাইরে। আর যে দুই-একটা কক্ষে একটু একটু কানেক্ট পাওয়া যায়, তারও স্পিডও কচ্ছপের গতির মতো। আর ফ্লোরে ফ্লোরে যেসব রাউটার আছে সেগুলোর একটাও ভালো না, সব অকেজো হয়ে পড়ে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নিম্নমানের ইন্টারনেট সেবায় অনেক শিক্ষার্থী বাইরের বেসরকারি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন। অনেক শিক্ষার্থী মোবাইলের ডাটা ব্যবহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইন্টারনেট সংযোগ থেকেও তারা সেটার সুবিধা পাচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াইফাই সেবা শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি।

No photo description available.

বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীরা জানান, এই হলেও ওয়াইফাই সে খুবই ধীরগতির। এতে পড়াশোনা বিষয়ক কোনো প্রয়োজনীয় কাজ করতে চাইলে ঠিকমত সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের ইন্টারনেটের খুব প্রয়োজনীয় কাজ থাকলে ডাটা কিনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থী হলটির প্রভোস্টের সামনে গিয়ে কাজ করে আসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহিন মুনজারিন বলেন, ডিজিটাল থেকে স্মার্টের দিকে প্রবহমান দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের বিকল্প নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের প্রিয় ৩০ একরের ছোট্ট এ ক্যাম্পাসে এখনো নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা যায়নি। শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় পুরো ক্যাম্পাসে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন নিম্নমানের ইন্টারনেট সেবায় অনেক শিক্ষার্থী বাইরের বেসরকারি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন। অনেক শিক্ষার্থী মোবাইলের ডাটা ব্যবহার করেন। -ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে পরিচালক ড. আব্দুর রহিম বলেন, আমরা একাডেমিক ভবনসহ হলগুলোতে ওয়াইফাই সেবার যথেষ্ট সংযোগ দেয়ার চেষ্টা করেছি। তবে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেক সময় গতি কমে যায়। আমরা বিডিরেনের সাথে কথা বলেছি। অতি শিগগিরই আমরা এমন ওয়াইফাই সুবিধা দিতে পারবো, যেটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাবে।

শিক্ষার্থীদের সমস্যা আমলে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে আব্দুর রহিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের কল্যানে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে যেখানেই সমস্যা হয়েছে জানতে পারার সাথে সাথেই সমাধান করে দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ না থাকলে তো আমরা বুঝতে পারবো না কোথায় সমস্যা। তবে তাদের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে ওয়াইফাই নিয়ে কোনো অভিযোগ আমরা এর আগে পাইনি।


সর্বশেষ সংবাদ