সাংগঠনিক সপ্তাহ ঘিরে উৎসবমুখর শাবিপ্রবি

  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশে কাজ করে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থীদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে তাদের আয়োজনে থাকে নতুনত্ব। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (শাবিপ্রবি) এর ব্যতিক্রম নয়। এবার নতুনদের সংগঠনের আগামীর চালিকা শক্তি হিসেবে পেতে ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয়েছে ‘সাংগঠনিক সপ্তাহ’। ক্যাম্পাসের অর্জুনতলায় চলমান এ উৎসব থেকে ‘সবাই এসো আলোর মিছিলে, হে নবীন তরুণ দল। ফুটন্ত টগ-বগে শিরা তোমার, এইতো সময় কিছু করার’ এভাবেই কবিতার ভাষায় নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা।  

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের অর্জুনতলায় তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক-সৌন্দর্যময় বিভিন্ন রকমের টেন্ট বা তাঁবু। যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সৃজনশীল প্রতিভা। প্রিয় সংগঠনের নামের সাথে মিল রেখে তৈরি করা প্রতিটি টেন্টই ধারণ করেছে বৈচিত্রতা। বাঁশের উপর ভর করে গাছের লতা-পাতার মাধ্যমে নান্দনিক সাঁজে তৈরি করেছেন এসব টেন্ট। সেই টেন্টে বসে গানের তালে তালে কিংবা নেচে গেয়ে দিনভর সদস্য সংগ্রহ করছেন সংগঠনের দায়িত্বরতরা। এ যেনো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার সেই লাইনকেই স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান’। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোতে নতুনদের জায়গা করে দিতেই প্রবীনদের এমন আয়োজন। 

চলমান এ সাংগঠনিক সপ্তাহে প্রথম ধাপে নতুন সদস্য সংগ্রহ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি সাংস্কৃতিক সংগঠন। শেষ ধাপে সদস্য সংগ্রহ করবে আরো ১৩টি সংগঠন। সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ও সরাসরি প্রচারণা চালাচ্ছেন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

'রিম মিউজিক্যাল ক্লাব'র সভাপতি শুভ বলেন, নিজের ইচ্ছাশক্তি ও পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গন একটি দেশের সমস্ত সংস্কৃতিকে ধারন ও লালন করে। সংগঠনে যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে তুলে ধরার সুযোগ পায়। তারুণ্যের অফুরন্ত প্রাণশক্তিকে পুঁজি করে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। সাংগঠনিক সপ্তাহের মাধ্যমে নবীনরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এসব সংগঠনে যুক্ত হয়ে নিজেদেরকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করে নিতে পারেন শিক্ষার্থীরা।

নাট্যচর্চা ও মননশীলতা উন্নয়নে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য সংগঠন থিয়েটার সাস্ট। সংগঠনের সভাপতি মেহেদি হাসান মিঠু বলেন, বর্তমান শিক্ষার্থীদের শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ আছে। গতবছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে সংগঠনগুলো। আমরা আশা করছি, গত দুই বছরে সংগঠনগুলোতে যে সংকট দেখা দিয়েছিলো বর্তমানে সবাই তা কাটিয়ে উঠতে পারবে। নাটক, অভিনয়ের মাধ্যমে আমরা সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরার চেষ্টা করতেছি, আশা করি নবীনরাও আমাদের সাথে যুক্ত হবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তিবাদিতা ও পরমতসহিষ্ণুতার অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করে বিতর্কচর্চা। বিষয়ভিত্তিক মনঃসংযোগ, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও সংবেদনশীলতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখে বিতর্কচর্চা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বিতর্ক বিষয়ক সংগঠন স্কুল অব ডিবেটের সভাপতি নাজনীন লিজা বলেন, বিভিন্ন সময় বাংলা ও ইংরেজি ভাষার উপর বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে সাস্ট এসডি। সেই ধারা অব্যাহত রেখে নতুন বিতার্কিক তৈরিতে সাংগঠনিক সপ্তাহে আমরা সদস্য সংগ্রহ করছি। যুক্তির মাধ্যমে কোনও বিষয় উপলব্ধির জন্য নবীন শিক্ষার্থী বিতর্ক সংগঠনে আসুক এটাই প্রত্যাশা।


সর্বশেষ সংবাদ