মাদক কারবারির হাতে খুন হন ফারদিন! 

ফারদিন
ফারদিন   © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশকে কে, কোথায়, কেন হত্যা করেছে সেসব প্রশ্নের কোনোটিরই সঠিক জবাব এখনো মেলেনি। তবে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নতুন মোড় নিচ্ছে। পেশাদার মাদক কারবারিদের হাতে ফারদিন খুন হয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। পুলিশ ও র‌্যাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে সমকালের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রযুক্তিগত তদন্তে উঠে এসেছে, নিখোঁজ হওয়ার রাতে ফারদিন তাঁর বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে রামপুরায় নামিয়ে দেওয়ার পর আরেক বান্ধবীর সঙ্গে মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। ওই বান্ধবীর সঙ্গে রাত ১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত মেসেঞ্জারে কথা বলেছেন ফারদিন। এরপর তিনি জনসন রোড ও চনপাড়া যান। 

সূত্র আরও জানায়, পরীক্ষার আগের দিন মধ্যরাতে ফারদিনের কেরানীগঞ্জ, জনসন রোড ও চনপাড়া যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছে একাধিক সংস্থা। তথ্য বলছে, মূলত মাদক কেনার জন্য ফারদিন কেরানীগঞ্জ ও জনসন রোডে যান। সেখানে এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শাহীন ওরফে সিটি শাহীন ও তার লোকজনের সঙ্গে ফারদিনের কথা কাটাকাটি হলে তারা ফারদিনকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

আরও পড়ুন: বিতর্ক করতে গিয়ে ফারদিন ও বুশরার পরিচয় চার বছর আগে 

র‌্যাব ও পুলিশ আলাদাভাবে গতকাল বৃহস্পতিবার চনপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল রাত ১১টার দিকে জানান, চনপাড়ায় মাদকের স্পটে বৃহস্পতিবার র‌্যাব-১ এর একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় সিটি শাহীন নামে এক মাদকের গডফাদার গুলিবিদ্ধ হয়। পরে হাসপাতালে নিলে তিনি মারা যান। 

এদিকে গত রাতে ফারদিনের বাবা ও মামলার বাদী কাজী নূর উদ্দিন রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফারদিনের যে স্বভাব-চরিত্র এবং যাদের সঙ্গে ওর মেলামেশা, তার তো চনপাড়ায় যাওয়ার কথা নয়। তাকে কখনও একটি সিগারেট ফুঁকতে দেখিনি। মাদকের স্পটে কেন গিয়েছিল- এ রকম কথা শুনতে খারাপ লাগছে। সব সময় টিউশনি-পড়াশোনা নিয়ে সে ব্যস্ত থাকত।

ফারদিন হত্যার তদন্তে যুক্ত এমন এক কর্মকর্তা বলেন, চনপাড়ায় যার বাসার পেছনে নিয়ে মাদক কারবারিরা ফারদিনকে হত্যা করেছে, তার নাম-পরিচয় জানা গেছে। পুলিশকে ওই এলাকার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, হত্যার পর নৌকা ভাড়া করে বুয়েট ছাত্রের লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে ওই নৌকার মালিককে খুঁজছে পুলিশ।

দায়িত্বশীল এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, ফারদিনের মাদক সেবনের বিষয়টি বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবী আগে থেকে জানতেন। ঘটনার রাতে তিনি হলে ফিরবেন- এটাও কেউ কেউ জানতেন। বুশরা যতক্ষণ তাঁর সঙ্গে ছিলেন, ততক্ষণ অন্য কারও সঙ্গে চ্যাট করেননি ফারদিন। বুশরাকে নামানোর পর আরেক বান্ধবীকে মেসেঞ্জারে জানান, বুশরাকে নিয়ে টিএসসিতে তিনি একসঙ্গে গান শুনেছেন।

প্রযুক্তিগত তদন্তে যুক্ত উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফারদিনের অবস্থান কেরানীগঞ্জে ছিল; এর পর জনসন রোড। সেখান থেকে যান চনপাড়ায়।


সর্বশেষ সংবাদ