ভর্তি পরীক্ষায় বাবা-ছেলে-মেয়ে সবাই সেরা

ভর্তি পরীক্ষায় বাবা-ছেলে-মেয়ে সবাই সেরা
ভর্তি পরীক্ষায় বাবা-ছেলে-মেয়ে সবাই সেরা  © সংগৃহীত

প্রকৌশল শিক্ষায় দেশের জন্য সেরা বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বরাবরই স্বপ্ন থাকে বুয়েটে পড়ার। কিন্তু আসন–স্বল্পতা ও তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে কেবল সেরাদের সেরারাই ভর্তির সুযোগ পান। সেখানে একই পরিবারের সবার বুয়েটে পড়াশোনা করা, আবর শিক্ষকতা করাকে ব্যতিক্রমী ঘটনা বলা চলে এমন প্রতিযোগিতার বাজারে।

অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম মিয়া, তাঁর সহধর্মিণী ও মেয়ে নাবিলা তাসনীম ও ছেলে নাফিস তাহমীদ সবাই বুয়েটিয়ান। অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়া বর্তমানে সহ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। পাশাপাশি, একই প্রতিষ্ঠানে রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন উপাচার্যেরও। কর্মজীবনে বুয়েটে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন দক্ষতার সাথেই।

তিনি জানান, আমার ছেলে যখন বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হয়, তখন আমার মা অর্থাৎ তার সন্তানের দাদি বেঁচে ছিলেন। তৃতীয় হওয়ার পর ছেলে নাফিস তার দাদিকে বলেছিলেন, দাদি, আমি তোমার ছেলেকে হারিয়ে দিয়েছি। এতে আমার মা খুবই খুশি হয়েছিলেন। আর বাবা হিসেবে আমি সন্তানের কাছে এমন পরাজয়ই তো চাই-বলে জানান তিনি।

ছেলেবেলা থেকেই ঢাকায় বসবাস এই অধ্যাপকের। ১৯৮১ সালে এসএসসি, আর ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি। চিকিৎসাবিদ্যা নাকি প্রকৌশলবিদ্যায় পড়বেন, তা নিয়ে কিছুটা দোটানায় থাকলেও গণিতের প্রতি বেশি ঝোঁক থেকে তিনি ভর্তি হন বুয়েটেই। সেজন্য অবশ্য তার বাবাও চেয়েছিলেন, ছেলে যেখানে পড়তে চাইবে, সেটাই হবে।

পরবর্তীতে আবুল কাশেম মিয়া ভর্তি হন বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে। অবশ্য তখন বুয়েটে চালু হয়নি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ। ইইইতেই পড়ানো হতো এই বিষয়টি। তিনি প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন এই অধ্যাপক।

আরও পড়ুন: স্কলারশিপের আবেদনের জন্য লাগবে যেসব কাগজ-পত্র

পরবর্তীতে তিনি বুয়েটে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বরে। আবুল কাশেম মিয়া জানান,  পিএইচডি করতে জাপানে যান ১৯৯২ সালে। ১৯৯৭ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক সুলতানা পারভীনকে। বর্তমানে তিনিও অধ্যাপনা করছেন বুয়েটে।

তিনি জানান, তার মেয়ে নাবিলা ইইই বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। আর ছেলে নাফিস পড়ছেন সিএসই বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে। মেয়ে নাবিলা তাসনীম ও ছেলে নাফিস তাহমীদ—দুজনই বুয়েট ক্যাম্পাসে অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভারসিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পাস করেছেন।

আবুল কাশেম মিয়া বলেন, বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া এখনো বিতর্কমুক্ত। প্রকৃত মেধাবীরাই এখানে ভর্তি হন এবং শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা থাকলেও বুয়েটে তা নেই।

আর শিক্ষার্থীদের জন্য আবুল কাশেম মিয়ার পরামর্শ, যখনই যে সুযোগ আসে, সেটিকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি জানান, দেশের শিক্ষার্থীরা মেধাবী ও বুদ্ধিমান। কিন্তু সুযোগ দিতে না পারায় তাঁরা পিছিয়ে পড়ছেন। দ্বিতীয়ত, এমন একটি বোধ জাগাতে হবে যে ‘আমাকে দিয়ে হবে না, এটি যেন শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই না ভাবে। প্রত্যেকে যেন মনে করে তাঁকে দিয়ে হবে। আর লেগে থাকলে সাফল্য আসবে- বলে দৃঢ় বিশ্বাস এই অধ্যাপকের।

আবুল কাশেম মিয়া শিক্ষকতার পাশাপাশি কাজ করেছেন সরকারের বিভিন্ন জাতীয় কমিটিতেও। ন্যাশনাল আইডি কার্ডসংক্রান্ত কমিটিতে কাজ করেছেন তিনি। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগসংক্রান্ত বিডিরেন প্রকল্পের মূল নকশা প্রণয়ন কমিটিতেও রয়েছেন। পাশাপাশি, দুই বছর ধরে এমবিবিএস (মেডিকেলে) ভর্তি পরীক্ষায় কারিগরি সহায়তার কাজ করছেন। করোনাকালে পরীক্ষা ছাড়াই বিষয় ম্যাপিং করে ফল প্রকাশের কাজেও তিনি যুক্ত ছিলেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence