মানদণ্ড ঠিক থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি  © ফাইল ফটো

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আগে জাতীয়করণ করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান বাড়লে দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে সবটুকু সক্ষমতা নিয়োগ করবে সরকার। এমপিওভুক্তর মানদণ্ড ঠিক থাকলে এমপিওভুক্তও করা হবে।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ মাঠে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) এর ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাশিপ সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাশিপের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবি

স্বাশিপের আট দফা দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয়করণ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই শিক্ষার মান অর্জন করতে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা কী বলে? আমরা যে সকল প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করেছি সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান কি আরও বেড়েছে, নাকি কমেছে। এটা আগে বুঝতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে সেখানে শিক্ষা মান যদি বাড়ে তাহলে সবগুলোই জাতীয়করণ করবো। যদি মান না বাড়ে তাহলে জাতীয়করণ অবশ্যই চাইবো না।

এমপিওভুক্তির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্ততে প্রথম কথা হচ্ছে সরকারের সক্ষমতার একটি ব্যপার আছে। কিন্তু যদি যোগ্য শিক্ষক না হন, তাহলে এমিপওভুক্তি কি সঠিক হবে? শিক্ষক মানসম্পন্ন কিনা, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত, পাশের হার কত? শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত? একটি মানদণ্ড থাকতে হবে। নিজেদের মানদণ্ডে রাখার চেষ্টা করেন। চেষ্টা করলে সম্ভব। তাহলে আমরা অবশ্যই এমপিওভুক্ত করবো।

আরও পড়ুন: সুখ বেড়েছে বাংলাদেশে, সুখী দেশের তালিকায় এগোলো ৭ ধাপ

বৈশাখী ভাতার দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আপনাদের এই ভাতাগুলো আরও বাড়ুক। আমরা নিশ্চয় চাই। আমি কথা দিতে পারি। আমরা দুজনে (মন্ত্রী ও উপমন্ত্রী) নিশ্চয়তা দিতে পারি আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা নিয়ে বলেছেন (দাবি করেছেন)। আর্থিক সক্ষমতার একটি ব্যাপর রয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগই বেসরকারি। কাজেই এখানে সরকারের বাজেট কতখানি লাগবে, কতখানি বাড়াতে হবে, সরকারের সক্ষমতার সঙ্গে সেটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। স্কুল মাদ্রাসা ও কারিগরিতে প্রধান শিক্ষকের স্কেল ভিন্ন হয়ে গেছে বলেছেন, সেটি আমরা দেখবো।

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেকে দক্ষ করে তোলেন। আমি আশা করবো আপনারা সবাই প্রশিক্ষণে উদ্যোগী হবেন। যেখানে সুযোগ পাবেন সব প্রশিক্ষণ নিয়ে নেবেন। এখনতো অনলাইন অফলাইন দুইভাবে প্রশিক্ষণ হচ্ছে। অনলাইনে নিজেদের দক্ষ করে তুলবেন।

আরও পড়ুন: জামা পরিবর্তনের ভিডিও দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, সেই যুবক গ্রেফতার

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন এখনও বাস্তবায়ন করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, দক্ষ, প্রায়োগিক ও বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা। সেটা আমরা এখনও করে উঠতে পারিনি। আমরা মনে করি শিক্ষা অর্জন করলে গাড়িঘোড়া চলবে। গাড়িঘোড়া চলাটা সফলতা নয়। গাড়িঘোড়া বানানো সফলতা। বঙ্গবন্ধু পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে চেয়েছিলেন। চলমান মেগা প্রকল্পগুলো শেষ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হবে। তবে শিক্ষা জাতীয়করণ করা হলো কিন্তু যে উদ্দেশে জাতীয়করণ সেই সফলতা আসলো না তাহলে হবে না। সে জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে শিক্ষকদের।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা জাতীয়করণের ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয়ে নিশ্চয়তা সরকার দেবে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা করবে।


সর্বশেষ সংবাদ