সংশোধিত এমপিও নীতিমালায় শিক্ষকদের বদলি নিয়ে যা আছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩৪ PM
বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত শিক্ষকরা শূন্য পদ থাকা সাপেক্ষে বদলি হতে পারবেন। সরকার এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করতে পারবে। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সংশোধিত এমপিও নীতিমালায় এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালার ১২.২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োগপ্রাপ্তসহ সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক/প্রদর্শক/প্রভাষকদের কোনো প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে সমপদে ও সমস্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয় নীতিমালা প্রণয়ন করে জনস্বার্থে আদেশ জারি করতে পারবে।’
১২.১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এমপিওভুক্ত কোনো সহকারী প্রধান শিক্ষক/প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষ অন্য কোনো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমপদে/উচ্চতর পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিধি মোতাবেক আবেদন করলে তাঁকে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে তাঁকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন প্রতিষ্ঠানে আবেদনকৃত পদে নির্বাচিত হলে যোগদানের পূর্বে পূর্বোক্ত প্রতিষ্ঠানের না-দাবিপত্র ও ছাড়পত্র নিতে হবে। তবে এক প্রতিষ্ঠান হতে অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানের মধ্যবর্তী সময় সর্বোচ্চ ২ (দুই) বছর পর্যন্ত তাঁর ইনডেক্স বহাল থাকবে। ০২ (দুই) বছরের অধিক হলে চাকরির বিরতি (Break of Service) বলে গণ্য হবে এবং এক্ষেত্রে পূর্বের ইনডেক্সের কোনো সুবিধাদি দাবি করা যাবে না এবং ঐ ইনডেক্সের কোনো অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে না এবং ইনডেক্স পূর্নবহাল করা যাবে না। যদি কোন শিক্ষক-কর্মচারীর নিয়মতান্ত্রিক ইনডেক্স কর্তন করা হয় তাহলে তিনি প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকান্ড হতে বিরত/অব্যাহতি প্রাপ্ত হবেন এবং তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি/এডহক কমিটির অংশ হতে পারবেন না। জোরপূর্বক দায়িত্ব পালন করলে তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান প্রধান/কমিটি ফৌজদারী মামলা রুজু করবেন।’
সংশোধিত নীতিমালার ১৮.১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিম্নোক্ত কারণে কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন- ভাতাদি’র সরকারি অংশের বরাদ্দ সাময়িক বন্ধ, আংশিক বা সম্পূর্ণ কর্তন কিংবা বাতিল করতে পারবে।’
কারণে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘নীতিমালার ৫নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আবশ্যকীয় শর্ত পূরণ না করলে বা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির শর্ত ভঙ্গ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানের এমপিও স্থগিত/বাতিল করা যাবে। সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক হিসাব সংরক্ষণ ও আয়-ব্যয় নিরীক্ষা না করলে/সরকারের নির্দেশনা প্রতিপালন না করলে/ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যমান PPR অনুসরণ না করলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বেতন-ভাতা স্থগিত/বাতিল করা হবে এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূণ্য ঘোষণাসহ তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিথ্যা তথ্য প্রদান, অবৈধ শিক্ষক নিয়োগ, ভূয়া শাখা/মিথ্যা শিক্ষার্থী প্রদর্শন, পাবলিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন, পাবলিক পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে পরীক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ না করা, নৈতিক স্খলন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তর/বোর্ডের 'আপিল অ্যান্ড আরবিট্রেশন'/জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আপীল কমিটি এর সিদ্ধান্ত প্রতিপালন না করলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠান প্রধানের বেতন-ভাতাদি স্থগিত/বাতিল করা হবে।
প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এনটিআরসিএ তে শিক্ষক-প্রদর্শকের চাহিদা দিলে উক্ত পদে এনটিআরসিএকর্তৃক সুপারিশকৃত শিক্ষক/প্রদর্শককে নিয়োগ দিতে হবে। চাহিদা দেয়ার সময় পদটি এমপিও নিশ্চিত হতে হবে। প্যাটার্ন অতিরিক্ত চাহিদা দিলে উক্ত শিক্ষক/প্রদর্শকের শতভাগ বেতন-ভাতাদি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্বাহ করতে হবে। এ শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের বেতন-ভাতা স্থগিত/বাতিল করা হবে এবং কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণাসহ তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমপিওভুক্তির জন্য ভূয়া/জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ/নিবন্ধন সনদ প্রদান, নিয়োগ সংক্রান্ত ভূয়া/জাল রেকর্ড প্রদান এবং প্যাটার্ন বহির্ভূত পদে এমপিওভূক্তির জন্য আবেদন প্রেরণ করলে প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতাদি স্থগিত/বাতিল করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা/পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ শূন্য ঘোষণাসহ তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম/বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ উত্তোলনে অনিয়ম/অনুচ্ছেদ ১৮.১ এ বর্ণিত অনিয়মের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষক/কর্মচারী/প্রতিষ্ঠান প্রধানের সরকারি অংশের বেতন-ভাতাদি/প্রাতিষ্ঠানিক এমপিও কোড মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর/মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সাময়িক স্থগিত করতে পারবে। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর দায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিংবডির সভাপতির নামসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রেরণ করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সংক্ষুব্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান/শিক্ষক/কর্মচারী/পরিচালনা কমিটির সভাপতি মন্ত্রণালয়ে আপিল করতে পারবে।’