ব্যাংকের শাখা সরলেও বিদ্যালয় ভবন বেদখল, বিঘ্নিত হচ্ছে ক্লাস
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২০, ০৮:১২ AM , আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০, ০৮:১২ AM
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বিদ্যালয়ের ভবন ভাড়া নিয়ে চলছিল সোনালী ব্যাংকের হরিখালী হাট শাখা। সেটি স্থানান্তর হয়েছে প্রায় এক যুগ আগে। কিন্তু সেখানে এখনও ব্যাংকের আগ্নেয়াস্ত্র এবং দুই হাজার কৃষকের জমির দলিলসহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান কাগজপত্র রাখা হয়েছে ভবনটিতে। ব্যাংকের একটি শাখার দাবিতে সেগুলো আনতে বাধা দিয়ে আসছেন স্থানীয়রা।
তবে এ কারণে বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের একটি ভবন ভাড়া নিয়ে চলছিল ব্যাংকের শাকাটির কার্যক্রম। সেই শাখা বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের মামামাল সেখানে পড়ে রয়েছে। ফলে দীর্ঘ এক যুগ ধরে কর্তৃপক্ষ ভাড়া দেওয়া কিংবা ক্লাস নিতে পারছে না ভবনটিতে। তারা এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, ১৯৭৯ সালে হরিখালীতে সোনালী ব্যাংকের শাখা প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ওই শাখাতে দীর্ঘদিন লোকসান হচ্ছিল ব্যাংকটির। ফলে ওই শাখাটি স্থানান্তর করে কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর শাখাটি উপজেলার সৈয়দ আহাম্মদ কলেজ স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়। এক বছর পর ২০০৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন শাখার নামকরণ করে ব্যাংকটির কার্যক্রম শুরু হয়।
কিন্তু স্থানান্তরের বিষয়টিকে সহজভাবে নেননি স্থানীয়রা। তারা ওই স্থানে শাখার কার্যক্রম বহাল রাখার দাবিতে স্থানান্তরের সময় বাধা দেন। এ কারণে ওই পুরাতন ভবন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, মূল্যবান কাগজপত্র এবং দুই হাজার কৃষকের দলিল আনতে পারেনি ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ। এরপর দীর্ঘ এক যুগ ধরে সেসব মালামাল ও দলিল সেখানেই পড়ে রয়েছে।
তবে বাংকের শাখা রাখার দাবির পাশাপাশি বন্ধকি ঋণের কারণে জমা রাখা দলিলও ফেরত পাওয়ার দাবি রয়েছে বিভিন্ন পেশার মানুষের। অনেকেই ঋণ শোধ করলেও দলিল আটকে রাখায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সেখানকার করমজা এলাকার কৃষক শামছুল আলম বলেন, ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করার পরেও দলিলপত্র ফেরত পাওয়া যায়নি। দলিলটা খুব দরকার বলেও জানানা তিনি। এ ধরনের অভিযোগ আারও অনেকের।
সোনাতলার মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসীম কুমার জৈন জানান, সোনালী ব্যাংক হাঁসরাজ বন্দর শাখা নামে একটি শাখা স্থাপনের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ জানান, ১৯৭৯ সাল থেকে বিদ্যালয়ের একটি ভবনের নিচ তলা ভাড়া নিয়ে ব্যাংক তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এখন ব্যাংকের কাছে ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ভবনে ক্লাসও নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যার জরুরি নিষ্পত্তি দরকার বলে জানান তিনি।
সোনালী ব্যাংকের সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন শাখার ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই ভবনে ব্যাংকের একটি আগ্নেয়াস্ত্র, কাগজপত্র, ফার্নিচার এবং প্রায় দুই হাজার কৃষকের দলিলপত্র আটকা রয়েছে। অচিরেই হরিখালী এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হবে। এসময় ব্যাংকের আটকে রাখা জিনিসপত্র ফেরত দিতে স্থানীয়দের নিকট অনুরোধ জানান তিনি।