৯ বছরের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে নন-এমপিও শিক্ষকদের

এমপিওভুক্তির তালিকায় ২ হাজার ৭৬২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বহুল প্রত্যাশিত দাবি আলোর মুখ দেখছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-ধর্মঘটের পর তাদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। ৯ বছর পর আগামী জুনের মধ্যে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ঘোষণা করবে সরকার। কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে। তবে কতটি প্রতিষ্ঠান এমপিও পাবে তা এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট করা হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এমপিওভুক্তির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। যে কোনো সময় ঘোষণা করা হবে।

জানা গেছে, ২ হাজার ৭৬২ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। নীতিনির্ধারকদের ইচ্ছা, সবগুলো প্রতিষ্ঠানকেই স্বল্প পরিসরে হলেও এমপিওভুক্ত করা হোক। ১০ এপ্রিল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালেও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। তবে পরে নানা বিশ্লেষণে ধাপে ধাপে এমপিওভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত আলোচনায় ওঠে আসে। সে অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৯৬টি প্রতিষ্ঠানের ভাগ্য খুলতে পারে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে নতুন প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অর্থ প্রাপ্তি এবং পরবর্তী বছরে সেই বরাদ্দ অব্যাহত রাখার ওপরে।

অন্যদিকে অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৮০ হাজার। অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতির বাইরেও আরও দুই হাজার নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

২০১০ সালে সর্বশেষ ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এর পর থেকে এ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে অসন্তোষ; অনশনসহ নানা কর্মসূচি পালনও করেছেন তারা। এরপর একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। সেই হিসেবে নয় বছর পর ফের নন-এমপিও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছেন। এজন্য প্রহর গুনছেন দেশের প্রায় ছয় হাজার নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী।

বর্তমানে ২৬ হাজার ১৮০টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত আছে। এর মধ্যে স্কুল ১৬ হাজার ১৯৭টি, কলেজ দুই হাজার ৩৬৫টি, মাদ্রাসা সাত হাজার ৬১৮টি। এ খাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মোট বরাদ্দের ৬৫ শতাংশই ব্যয় হয় বলে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদের আগেই এমপিওভুক্ত চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। কিন্তু সেটা সম্ভব না-ও হতে পারে। তবে ঘোষণা যখনই হোক না কেন আগামী জুলাই মাস থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির সুবিধা পাবেন। তবে কত সংখ্যক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে তা আগামী অর্থবছরের জন্য বরাদ্দের ওপর নির্ভর করছে।

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন। অনেকের চাকরির বয়স শেষের পথে। আমরা চাই, সকল প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে এমপিওভুক্তি করা হোক।’

 

 


সর্বশেষ সংবাদ