টেলিগ্রাম থেকে ইনকাম করবেন যেভাবে

টেলিগ্রাম
টেলিগ্রাম  © সংগৃহীত

টেলিগ্রাম বর্তমানে একটি জনপ্রিয় অ্যাপ। অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মতো টেলিগ্রাম অনেকেই ব্যবহার করেন। কিন্তু তা থেকে টাকা উপার্জন করার উপায় খুবই কম। তবে সেই ছবি পালটাতে চলেছে কোম্পানি। টেলিগ্রামের সিইও জানান, টেলিগ্রাম থেকে এবার মোটা টাকা আয় করতে পারবেন চ্যানেল মালিকরা।

প্ল্যাটফর্মটি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের পাশাপাশি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য একাধিক ফিচার আনতে চলেছে কোম্পানি। চ্যাটিংয়ের পাশাপাশি গ্ৰুপ ও চ্যানেলেও দারুণ সব সুবিধা যোগ হবে এমনটা ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপকে জোর টেক্কা দিচ্ছে মেসেজিং অ্যাপ; যা এখন আর শুধু মেসেজিংয়ে সীমাবদ্ধ নেই, হয়ে উঠেছে ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম।

এই প্ল্যাটফর্ম থেকে কেউ টাকা আয় করতে চাইলে অবশ্যই বেশ কিছু সময় খরচ করতে হবে। এর বিনিময়ে ঘরে বসেই নিজের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মাসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এক্ষেত্রে টেলিগ্রাম চ্যানেল বা গ্রুপের নামটি অবশ্যই আকর্ষণীয় হতে হবে। পাশাপাশি চ্যানেলে লোগো ও ডেসক্রিপশন ব্যবহার করতে হবে। চ্যানেলকে আরও কার্যকরী এবং ফলোয়ার ধরে রাখতে নিয়মিত কন্টেন্ট দিতে হবে। তাছাড়া গ্রুপের মেম্বার বাড়ানোর জন্য নিয়মিত শেয়ার এবং মেম্বারদের ধরে রাখতে গিভওয়ে এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট দেয়া প্রয়োজন।
 
এসব কিছুর পর গ্রুপে বা চ্যানেলে আয়ের উৎস তৈরি হয়। সাধারণত কয়েকটি উপায়ে ফ্রিল্যান্সাররা এই আয় করেন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী কয়েকটির কথা এখানে উল্লেখ করা হলো।
 
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই অবগত। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কারও মাধ্যম হয়ে বিক্রি হলে সেটা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নামে পরিচিত।
 
সাধারণত টেলিগ্রামের গ্রুপে বা চ্যানেলে কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের লিংক দেয়া হলে সেখানকার কোনো মেম্বার সেই লিংকে প্রবেশ করে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি নিলে প্রোডাক্টটির মোট মুনাফার একটা অংশ সেই চ্যানেলের বা গ্রুপের মালিককে দেয়া হয়।
 
আয়ের অন্যতম সেরা উপায় এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য কোনো ধরনের বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। যে কেউ চাইলে জনপ্রিয় তিনটি ই-কমার্স সাইটের এই মার্কেটিং করতে পারে। এদের মধ্যে আছে অ্যামাজন, ই-বে, ফ্লিপকার্টের মতো প্রতিষ্ঠান। এদের ওয়েবসাইটে গেলে ‘বিকাম এফিলিয়েট’ অপশন থেকে নির্ধারিত তথ্য দেয়ার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব। শুধু যা করতে হবে তা হলো গ্রুপে লিংক দেয়া এবং এর মাধ্যমে আপনার মেম্বাররা যেকোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনলেই মিলবে লভ্যাংশ।
 
পেইড প্রমোশন

হাজার হাজার ফলোয়ার থাকলে বিশ্বের অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মতো টেলিগ্রামেও পেইড প্রমোশনের কাজ করা যায়। এজন্য নিজের চ্যানেল বা গ্রুপকে সবসময় একটিভ রাখতে হয়। বিভিন্ন কন্টেন্টে ভরপুর একটা গ্রুপে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হর-হামেশাই টাকা দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন করাতে চাইবে।

রেফারেল ইনকাম

অনলাইনে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো রেফার করার মাধ্যমে টাকা আয় করা যায়। যেহেতু কমপক্ষে ৫ হাজার সদস্য নিয়ে গ্রুপ খোলা হয়েছে, সেই গ্রুপে অ্যাপগুলো একটা নির্দিষ্ট লিংকের মাধ্যমে দিলে মেম্বাররা সেই লিংক থেকে অ্যাপের সার্ভিস নিবে এবং রেফারেল আইডি তার একাউন্টে পাবে লাভের টাকা।
 
চ্যানেল এড বিক্রি

 আয়ের জনপ্রিয় মাধ্যমগুলোর একটি হলো অন্য চ্যানেলের বিজ্ঞাপন দেয়া। যেসব চ্যানেল পরবর্তীতে আয় করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়, এদের অনেকে মেম্বার বাড়ানোর জন্য অন্য চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন এবং এজন্য ভালো পরিমাণে বিজ্ঞাপনের অর্থও দিয়ে থাকেন তারা।
 
পেইড সাবস্ক্রিপশন

যদি চ্যানেলটি মানসম্মত হয় তবে এমন কিছু প্রিমিয়াম কন্টেন্ট রাখা যায় যেগুলো সদস্য বা ফলোয়ারদের নির্দিষ্ট টাকায় সাবস্ক্রাইব করে দেখতে বা ব্যবহার করতে হবে। কন্টেন্ট যথেষ্ট ভালো এবং ফলোয়ারদের কাছে আকর্ষণীয় হলে এমন অনেক চ্যানেল আছে যারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিনোদনের কন্টেন্টের সাবস্ক্রিপশন বিক্রি করে নিয়মিত আয় করছে।
 
রিসেলিং প্রোডাক্ট

এমন অনেক ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস আছে যেগুলোতে যোগাযোগ করলে তাদের প্রোডাক্ট নিজের চ্যানেলে বিক্রি করা যায়। অর্থাৎ থার্ড পার্সন হিসেবে সেই প্রতিষ্ঠান অন্য কাউকে শর্তসাপেক্ষে তাদের পণ্য বিক্রি করার অনুমতি দেয়, এতে উভয়ই লাভবান হয়।
 
ইউআরএল (URL) শর্টনার

অনেক সময়ই দেখা যায় কোনো একটা ভিডিও দেখতে গেলে অন্য আরেকটা বিজ্ঞাপন আগে আসে। এতে সেই চ্যানেল বা ভিডিও পোস্টদাতা বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান থেকে লাভবান হয়। এরকমই এক পদ্ধতি হচ্ছে ইউআরআল শর্টনার। এটি হচ্ছে কোনো একটা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের লিংক সাধারণত শর্ট করে আনা। শর্ট করার জন্য এখন ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে। সেই ওয়েবসাইটগুলো থেকে লিংক ছোট করে নিয়ে কন্টেন্টের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এতে ফলোয়ার কন্টেন্টটির লিঙ্কে ক্লিক করলেই নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপন সামনে আসবে বা অন্য কোনো সাইটে প্রবেশ করবে। এতেই মিলবে লভ্যাংশ।


সর্বশেষ সংবাদ