অবৈধ স্মার্টফোন বৈধকরণে এনইআইআর সিস্টেম পুনর্গঠনের দাবি ব্যবসায়ীদের

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার
ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার  © সংগৃহীত

এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে দেশের মোবাইল বাজারে নতুন সিন্ডিকেট গঠনের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ। সংগঠনের দাবি, দেশের ৬০–৭০ শতাংশ ব্যবসায়ীকে বাদ দিয়ে মাত্র ৩০ শতাংশ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি চক্র সিন্ডিকেট তৈরি করতে চাচ্ছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম মোল্লা, কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের সভাপতি আরিফুর রহমান, শাহ আলম বোখারীসহ বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

নেতারা অভিযোগ, আজকের প্রেস কনফারেন্স ভণ্ডুল করতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পিয়াসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৩টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তারা অভিযোগ করেন, কিছু ব্র্যান্ড এবং বাজারনিয়ন্ত্রক স্বার্থগোষ্ঠী এ ঘটনায় জড়িত।

এসময় এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, যে সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, তারাই আমাদের সাধারণ সম্পাদককে টার্গেট করেছে। এনইআইআর বাতিল নয়, ব্যবসায়ীরা এনইআইআর পুরোপুরি বাতিল চান না, বরং এক বছর সময় নিয়ে সিস্টেমটি পুনর্গঠন, এবং বাস্তবায়নের আগে মোবাইল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক চায়।

আরিফুর রহমান বলেন,  ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী আইনসম্মতভাবে আনা মোবাইল সেট বাজারে বিক্রি করার সুযোগ না দিলে লাখো ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ৫৭ শতাংশ ট্যাক্স বাড়লে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। এনইআইআর সিস্টেমে সম্ভাব্য ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত ট্যাক্স বৃদ্ধির ফলে মোবাইলের দাম কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দিনমজুর, রিকশাচালক, দর্জি, নিম্ন–মধ্যবিত্ত পরিবার ও শিক্ষার্থীরা।

তিনি জানান, গ্রে মার্কেটে কম দামে ভালো কনফিগারেশনের ফোন পাওয়ায় সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন উপকৃত হয়েছে। এআই–নির্ভর ভবিষ্যতের যুগে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে গেলে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেন তারা। 

সংগঠনের অভিযোগ—দেশের মোবাইল বাজার বর্তমানে মাত্র ১৮ জন লাইসেন্সধারীর হাতে কেন্দ্রীভূত। তাদের দাবি, ২০ কোটি মানুষের দেশে মোবাইল ব্যবসার লাইসেন্স ১৮ জনের হাতে থাকতে পারে না। লাইসেন্স সংখ্যা অন্তত পাঁচ হাজার করতে হবে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যানের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে শামীম মোল্লা বলেন, ব্যবসায়ীরা বিটিআরসি চেয়ারম্যানের ‘চোর’ মন্তব্যে তারা অপমানিত বোধ করেছেন। তাদের প্রশ্ন—ব্যাগেজ রুলসে সরকার অনুমোদন দেওয়া পণ্য বিক্রি করলে তা কীভাবে অবৈধ হয়? আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই যে- ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স দিতে প্রস্তুত, তবে যৌক্তিক নীতিমালা প্রয়োজন। বাস্তবায়নের আগে গণশুনানি করে জনগণের মতামত নিতে হবে।

এসময় হুঁশিয়ারি দিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন- এনইআইআর বাস্তবায়নে ‘সিন্ডিকেটের প্রভাবে’ এই সিদ্ধান্ত কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর ওপর প্রভাব ফেলবে। জনগণ ক্ষুব্ধ হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। জনগণকে ক্ষেপাবেন না। প্রয়োজন হলে গণআন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ