নিলুফারের তৈরি সুপারি খোলের থালা-বাসন, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে

সুপারির খোলের তৈরি তৈজসপত্র
সুপারির খোলের তৈরি তৈজসপত্র  © টিডিসি

সুপারির জন্য বিখ্যাত পিরোজপুরের কাউখালী। গোটা উপজেলায় রয়েছে সারি সারি সুপারি গাছ। এ সব গাছ থেকে ঝরে পড়া খোল বা বাইল এক সময় বাগানে পড়ে থেকে নষ্ট হতো। তবে এখন সেটি থেকেই তৈরি হচ্ছে ওয়ানটাইম বা একবার ব্যবহার উপযোগী থালা, বাটি, নাশতার প্লেট, ট্রেসহ নানা রকমের তৈজসপত্র। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো  হৈ চৈ লেগে গেছে। 

গাছ থেকে একটি খোল পরার সাথে সাথেই তা সংগ্রহ করছেন এলাকাবাসী। অন্যান্য গাছ কেটে মানুষ এখন ঝুঁকছে সুপারি বাগান তৈরি করতে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান। ভোক্তরাও স্বল্প মূল্যে মানসম্মত প্লাস্টিকের বিকল্প থালা-বাসনসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে বেশ খুশি। দেশের সীমানা পেরিয়ে  পরিবেশবান্ধব এসব সামগ্রীর ব্যবহার শুরু হয়েছে বিদেশের মাটিতে। 

প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব তৈজসপত্র তৈরির ব্যতিক্রমধর্মী এ উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাঙ্গুলী গ্রামের ন্যাচারাল বিউটি প্রাইভেট লিমিটেড স্বত্বাধিকারী নারী উদ্যোক্তা নিলুফার ইয়াসমিন। তিনি কেউন্দিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান জুয়েলের স্ত্রী। 

এ বিষয়ে নিলুফার ইয়াসমিনের স্বামী  ইঞ্জিনিয়ার জুয়েল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, তার স্ত্রী বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন যে প্লাস্টিকের সামগ্রী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। প্লাস্টিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।  তখন থেকেই প্লাস্টিকের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বিকল্প কী হতে পারে এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা শুরু করেন নিলুফার। পরে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে জানতে পারেন সুপারি গাছের খোল দিয়ে বিভিন্ন প্রকার পরিবেশবান্ধব সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব। তখনই তার স্ত্রী বিষয়টি তাকে জানান এবং পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।  

তিনি আরও জানান, স্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী সুপারির খোল দিয়ে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী তৈরি করার কারখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি । কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কারখানার মেশিন আমদানি নিয়ে। মেশিনগুলো ইন্ডিয়া অথবা অন্য কোন দেশ থেকে আমদানি করতে হলে অনেক ব্যয়বহুল। যে কারণে থমকে যায় তার পরিকল্পনা। ঠিক সেই মুহূর্তে স্ত্রীর পরিকল্পনায় অটল থাকেন। তিনি অন্য একটি কারখানা দেখে ইন্ডিয়ান মেশিনের মতো করে নিজস্ব পরিকল্পনায় দেশেই তৈরি করেন সুপারির খোল দিয়ে থালা বাসন তৈরি করার মেশিন।

পরে বাড়ির পাশে কাউখালী-ঝালকাঠি সংক্ষিপ্ত সড়কের পাশে গাঙ্গুলী সাহাপুরা গ্রামে মামা ফরিদ হোসেনের একটি ঘর ও জায়গা ১০ বছর চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করেন কারখানা। এরপর থেকে কারখানায় তৈরি করা হয় বিভিন্ন প্রকার থালা, বাসন, বাটি, পেয়ালা, ট্রে সহ বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব সামগ্রী।  

তিনি আরও বলেন, উন্নতমানের ভালো সাইজের একটি খোল দুই টাকার বিনিময় কিনছেন তারা। বর্তমানে ৪জন কর্মচারী সম্পূর্ণ কেমিক্যাল মুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে দৈনিক ৫০০-৬০০ তৈজসপত্র তৈরি করছেন। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিল ও কর্মচারী বেতন দিতে প্রায় ৫০/ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হলেও আমার স্ত্রীর লাভবান হচ্ছে।  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence