পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পাড়ি ঢাবির দুই গার্ল ইন রোভারের
- মো. মাহবুবুর রহমান সাজিদ
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৩ AM , আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৩ AM
আজকের এই আধুনিক যুগে এসে পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পরিভ্রমণ! এটা যেমন অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য, তেমনি কারো কারো নিকট এটা কল্পনারও বাইরে। আর সেই অবিশ্বাস্য বিষয়টিকে সম্ভব করে দেখালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট গ্রুপের দুঃসাহসী গার্ল ইন রোভার লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবিয়া আক্তার এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আঁখি আরা জামান আনন্দী।
তারা গত ৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে যাত্রা শুরু করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের যাত্রা শুরু হয় ৭ অক্টোবর নরসিংদী থেকে। তাদের গন্তব্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজার জেলা।
পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটারের যাত্রাপথে তারা জনসচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্যাঁশে (বিশেষ উত্তরীয়) ‘বাল্যবিবাহ রোধ করি’, ‘ইভটিজিং প্রতিরোধ করি’, ‘নারী নির্যাতন বন্ধ করি’ লেখা স্লোগান বহন করেন। কৌতুহলী অনেকেই জানতে চান তারা কেন এমনটা করছেন? তাদের উদ্দেশ্যই বা কী?
তারা জানান, রোভারিংয়ের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির লক্ষ্যে সেবাস্তরে রোভারদের পায়ে হেঁটে ১৫০ কিলোমিটার বা নৌকাযোগে ৩০০ কিলোমিটার কিংবা সাইকেলযোগে ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে একটি প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে হয়, যা স্কাউটিংয়ে র্যাম্বলিং নামে পরিচিত।
তারা সেই প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ১৫০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোভার স্কাউট গ্রুপের ৫২ বছরের ইতিহাসে ছেলেদের একাধিক দল র্যাম্বলিং করলেও গার্ল ইন রোভার দলের এটাই প্রথম। তাই তাদের উচ্ছ্বাসটাও ছিল দেখার মত। স্কাউটিংয়ের মূলমন্ত্র সেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা প্রচার করেন তারা।
তাদের ভ্রমণ কেমন কেমন হলো জানতে চাইলে আঁখি আরা জামান আনন্দী বলেন, ‘নরসিংদী, ভৈরব, মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এটা আমাদের জীবনের সেরা একটি অভিজ্ঞতা। ভবিষ্যতে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই।’
দলনেতা রাবিয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদের এই অভিযান সমাজের জন্য এক নতুন বার্তা। মেয়েরাও যে ছেলেদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়, সুযোগ পেলে মেয়েরাও করতে পারে বিশ্বজয়। আমরা সেটাই করে দেখাতে চেয়েছি।’
১১ অক্টোবর দুপুরে মৌলভীবাজার শহরে পৌঁছালে শেষ হয় তাদের পরিভ্রমণ। তারা সবশেষে শাহ্ সৈয়দ মোস্তফা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদকের সাথে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিভ্রমণের ইতি ঘটান। এভাবেই শেষ হয় তাদের পায়েহেঁটে ১৫০ কিলোমিটার পথ পরিভ্রমণ।