উৎপলকে মারধরের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উল্টো শাসিয়ে যান জিতুর বাবা

নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার ও বখাটে ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু
নিহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার ও বখাটে ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু  © সংগৃহীত

উগ্র প্রকৃতির আশরাফুল ইসলাম জিতু বখাটে হিসেবে পরিচিত এলাকায়। প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় কাউকে পাত্তা দিত না, বেপোয়ারা চলাচল করত। এলাকায় সে 'জিতু দাদা' হিসেবে পরিচিত। এই নামে তার ফেসবুক আইডি। হামলার দিন জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজী শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে শাসিয়ে যান।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জিতুর বাবার উগ্রতার কথা জানান এক শিক্ষার্থী ও নিরাপত্তাকর্মী। আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা হত্যার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।

প্রতিষ্ঠানটির দারোয়ান আব্দুস সালাম বলেন, ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পর জিতুর বাবা উজ্জ্বল হাজী হাজির হন। তিনি উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চান। পরে ধমকের সুরেই তিনি বলেন, আমার ছেলে এত লোকের মাঝে মারল, এটা কি বিশ্বাস করা যায়!

এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই জিতুকে পেছন থেকে জাপটে ধরেন শফিক স্যার। জিতু হাত-পা ছোড়াছুড়ি করছিল। নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে শিক্ষকের খারাপ আচরণ করে জিতু। পরে স্যার জিতুকে ছেড়ে দিয়ে উৎপল স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আরো ৫-৭ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল জিতু। কয়েকজন ছাত্রী এর প্রতিবাদ করলে জিতু বলে, ‘মারছি তাতে কি হইছে?’ পরে পেছনের গেট দিয়ে বের হয়ে যায় সে।

আরো পড়ুন: স্ট্যাম্প দিয়ে ছাত্রের পিটুনির শিকার শিক্ষক উৎপল মারা গেছেন

অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, হাসপাতালের আইসিইউতে উৎপল কুমারকে দেখে বের হওয়ার সময় এক নারী এসে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, স্যারের অবস্থা কি? বললাম ভালো না। তিনি আবার বলেন, চিকিৎসা যা করার করেন, আমরা দেখব। আমি বলি আপনি কে? তিনি বলেন, জিতুর মা। সঙ্গে আরেকজন বয়স্ক নারী ছিলেন, তিনি জিতুর দাদি। পরে শুনেছি জিতুর বাবাও হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

গত শনিবার দুপুরে আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে শিক্ষক উৎপলের ওপর হামলা চালিয়ে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষক উৎপল মারা যান। রোববার আশুলিয়া থানায় তার ভাই বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীসহ তার পরিবার পলাতক রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!