যৌনকর্মীর সঙ্গ নিয়ে বিরোধ, বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল মাদ্রাসাছাত্রের

রাকিব হোসেন
রাকিব হোসেন  © সংগৃহীত

বগুড়ার সোনাতলায় যৌন কর্মীর সাথে সঙ্গ দেওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে রাকিব হোসেন (১৪) নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা করেছে তারই এক বন্ধু। হত্যাদ তিনদিন পর রাকিবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত একই এলাকার আহসান হাবীব সজীব (২০) মাথায় আঘাতের পর গলাটিপে রাকিবের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর আরেক কিশোরের (১৫) সহায়তায় ডোবার কচুরিপানার নিচে মরদেহ ফেলে দেয়।

রবিবার (৫ জুন) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন এসব তথ্য জানান।

নিহত রাকিব গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামের শামসুল হক শেখের ছেলে। বগুড়ার সোনাতলা সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত সে।

গত ৩১ মে বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি রাকিব। স্বজনরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও তাকে পায়নি। ৩ জুন, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সোনাতলা উপজেলার চমরগাছা লাহিড়ীপাড়ায় একটি ডোবায় কচুরিপানার ভেতরে তার পচন ধরা মরদেহ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় রাকিবের ভাই বেলাল হোসেন সোনাতলা থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় বগুড়া পিবিআইকে।

তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজ আলী তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করেন।

তিনি গত শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রাম থেকে রাকিবের ঘনিষ্ট বন্ধু আহসান হাবীব সজীব এবং এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রাকিবকে হত্যার দায় স্বীকারের পর হত্যাকাণ্ডের কারণ ও বর্ণনা দেয়।

পুলিশ জানায়, দুই বন্ধুর সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে (জুয়া) মোবাইল গেম ফ্রি ফায়ার খেলত রাকিব। এ জুয়ার পাওনা টাকা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে রাকিবের বিরোধ ছিল। এদিকে, সজীব মাঝে মাঝে গ্রামের জনমানবহীন এলাকায় যৌনকর্মীদের নিয়ে আসত।

গত ৩১ মে এক যৌনকর্মীকে গ্রামের পতিত জমিতে আনা হবে বলে রাকিবকে জানায় সজিব। ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা তিনজন পূর্বনির্ধারিত জায়গায় যায়। ওই নারী আসার আগেই কে তার সংস্পর্শে আগে যাবে, তা নিয়ে সজীব ও রাকিবের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।

এক পর্যায়ে সজীব ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের আরেক বন্ধুর কাছে থাকা আম ডাল দিয়ে রাকিবের মাথা ও চোখে আঘাত করে। এতে রাকিব মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মাথায় আরও ৩-৪ বার আঘাত করা হয়। এরপর সজীব গলাটিপে ধরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।

হত্যার পর ওই কিশোরের সহযোগিতায় রাকিবের মরদেহ টেনে-হেঁচড়ে ঘটনাস্থলের কাছে ডোবায় ফেলে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেয়। পরে তারা বাড়ি ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে থাকে।

তাদের গ্রেপ্তারের পর শনিবার বিকেলে পিবিআই অভিযুক্তদের বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম সঞ্চিতা ইসলমের আদালতে হাজির করে। সেখানে সজীব ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিতে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence