আগুনে পুড়িয়ে মারা নুসরাতের মৃত্যবার্ষিকীতে ভাইয়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস

নুসরাত জাহান রাফি ও তার ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান
নুসরাত জাহান রাফি ও তার ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান  © ফাইল ছবি

সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাহর যৌন নিপিড়নের শিকার হন। এ ঘটনায় তার মা শিরিন আক্তার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মামলা তুলে না নেওয়ায় ওই বছরের ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে ভবনের ছাদে হাত-পা বেঁধে তার শরীরে অগ্নিসংযোগ করেন কয়েকজন।

২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রাফির মৃত্যু হয়। যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ করে হত্যার শিকার মাদ্রাসাছাত্রী রাফির তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এই দিনে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।

রায়হান লিখেছেন, একদিন দুই দিন করে করে তিনটি বছর প্রিয় বোন নুসরাত জাহান রাফি আমাদের মাঝে নেই। প্রতিটি দিন বছরের চেয়েও বেশি মনে হয়, চারপাশ যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন। এতো আলো, তবুও যেন অন্ধত্বতেই আছি। কেননা বোন ছিল আমার আলো। সেই আলোই নিভিয়ে দিল হিংস্র জানোয়ারের দল। হাতছানি দিতেই যেন আপুর স্পর্শ পাই। ঘ্রাণ আসে আদর মাখা ডাকের। জীবন্ত আপুর রেখে যাওয়া স্মৃতি।

রায়হান বলেন, আমি আপনাকে মিস করছি আপু। আমার অনুভূতি আচ্ছন্ন করে আছেন, শুধু শারীরিক উপস্থিতিটাই নেই। আপনার শূন্যতা কেউ প্রতিস্থাপন করতে পারেনি আপু। কেউ আপনার মতো ভালোবাসতেও পারেনি। আজও আপনার ক্ষতবিক্ষত দেহে বাঁচার আকুতি। অসহায়ত্ব ঘিরেই যেন প্রাণহীন দেহ নিয়ে চলছি-ফিরছি। কিন্তু আপনার হত্যাকারী ও তাদের প্রেতাত্মারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে। প্রতিনিয়ত আমাদের কোনঠাসা করে রাখতে, চুপসে যেতে কত কিছুই করছে।

এ সময় রায়হান অতিদ্রুত রাফির হত্যাকারীদের রায় কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান। এ ছাড়া মাহে রমজানে সবার নিকট নুসরাত জাহান রাফির রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া চান।

রাফি হত্যার ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল বড় ভাই মাহমুদল হাসান মামলা করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্ততর্ক শেষে ওই বছরের ২৪ অক্টোবর ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।

আরো পড়ুন: নুসরাত হত্যা: মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামিকে কনডেম সেলে পাঠাতে চিঠি

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সোনাগাজী মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ-দৌলা, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি ও গভর্নিং কমিটির তৎকালীন সহসভাপতি রুহুল আমিন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলমও রয়েছেন।

এ মামলার রায়ের পর ২৯ অক্টোবর আসামিদের যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্টে পৌঁছে। আসামিরা আপীল করেছেন। তবে করোনার কারণে আপিল বেঞ্চ ভেঙে গেলে থমকে যায় শুনানি। বর্তমান প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ গঠন করে দিলে দ্রুত কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু ও বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence