ফেসবুকে প্রেম, প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছেড়ে লাশ হলেন স্কুল ছাত্রী

ফেসবুকে তাদের প্রেম-পরিচয় হয়
ফেসবুকে তাদের প্রেম-পরিচয় হয়  © প্রতীকী ছবি

ফেসবুকে প্রেম-পরিচয়। এরপর প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়েন ফারহানা আক্তার নাদিয়া  নামের এক স্কুল ছাত্রী। প্রায় সাড়ে সাত মাস আগের ঘটনা এটি। সেই নাদিয়ার মরদেহ পড়েছিল রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিডফোর্ট) হাসপাতালের মর্গে।

পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে আজ শনিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতাল মর্গে নাদিয়ার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তার বাবা-মা ও স্বজনরা। এর আগে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বাসার লোকজন নাদিয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাদিয়া সিলেট নগরের রায়নগর দর্জিপাড়া এলাকার মাসুম মিয়ার মেয়ে। তার প্রেমিক আসিফুর রহমান ঢাকার গেন্ডারিয়া ব্যানার্জী চৌধুরী রোডের ১৪/২ বাসার আমিনুর রহমানের ছেলে।  

পুলিশ যদিও ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। কিন্তু নাদিয়ার বাবা বলছেন, তার কথিত প্রেমিক আসিফ তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।  

গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, হাসপাতাল থেকে নাদিয়ার আত্মহত্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্যে আমরা নাদিয়ার পরিবারকে ঘটনাটি জানাই। তবে নিহত নাদিয়ার পরিবারের অভিযোগ পেলে তা আমলে নিয়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

নিহত নাদিয়ার বাবা মাসুম মিয়া বলেন, প্রায় সাড়ে সাত মাস আগের ঘটনা। তার মেয়ে এসএসসিতে এক বিষয়ে ফেল করেন। তখন মেয়ের বয়স ছিল ১৭ বছর পাঁচ মাস। করোনার কারণে পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তখন ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তার মেয়েকে ফুসলিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন আসিফ। বর্তমানে মেয়ের বসয় ১৮ বছর চার মাস। তাদের মধ্যে বিয়ে হয়েছি কিনা তাও জানি না। শুক্রবার রাত ১১টায় পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়েছি, মেয়ের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। খবর পেয়েই ছুটে আসি। সকালে মর্গে গিয়ে নাদিয়ার মরদেহ দেখতে পাই।

তিনি আরও বলেন, আসিফ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি নাকি সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। সাড়ে ৮টায় এসে দেখতে পান নাদিয়া ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।

তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরেও নাদিয়া তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আত্মহত্যা করবে এটা মানতে পারছি না। তার মুখে, মাথায় আঘাতের চিহ্ন ও গলায় রশির দাগ রয়েছে। তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ  করেন নাদিয়ার বাবা।

ওসি আরও বলেন, আসিফ বাইক মেরামতের কাজ করেন। তার দাবি, সন্ধ্যা ৬টায় বাসা থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর রাত সাড়ে ৮টায় বাসায় এসে নাদিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে তা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। তবে পরিবারের অভিযোগ পেলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, নিহত নাদিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের হাতে হস্তান্তর করা হবে। এরপর মরদেহ সিলেটে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নাদিয়ার স্বজনরা।


সর্বশেষ সংবাদ