মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁস: চাকরি হারালেন ব্যাংক কর্মকর্তা

আতিকুল হাসান
আতিকুল হাসান  © টিডিসি ফটো

২০১৯ সাল ও তার পূর্বে বিভিন্ন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। তার নাম আতিকুল হাসান ওরফে লিটন। তিনি ব্র্যাক ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি সাভারে।

জানা গেছে, বিভিন্ন সময় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দায়ের হওয়া এক মানিলন্ডারিং মামলায় সম্প্রতি ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশের সিআইডি। এরপরই তাকে চাকরিচ্যুত করে ব্র্যাক ব্যাংক।

ব্র্যাক ব্যাংকের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্সের সহযোগী ব্যবস্থাপক রাফিদ জাকি সুয়েল জানান, আতিকুল হাসান ব্র্যাক ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ইন্টার-ব্যাংক ক্যাশ ম্যানেজমেন্টের প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই বিভাগের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠায় তাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ব্যাংক কর্মকর্তা আতিকুল হাসান মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভুঁইয়া ওরফে মুন্নুর গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফাঁস করা প্রশ্ন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। জসীমের কাছ থেকে উদ্ধার করা গোপন একটি ডায়েরিতে চক্রের সদস্য হিসেবে আতিকুল হাসান লিটনের নাম লেখা ছিল। তার ব্যাংক হিসাবের লেনদেন এবং সম্পদের খোঁজ চলছে বলেও জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

সিআইডি সূত্র জানায়, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম ছিল আতিকুল হাসানের বাবার ছাত্র। সেই সূত্রে জসীমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মেডিকেল ভর্তির সময় এলেই জসীম তার কাছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী চাইতো। তার অনুরোধে বিভিন্ন সময়ে কিছু শিক্ষার্থী দিয়েছেন বলেও জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় দায়ের হওয়া মানিলন্ডারিং মামলাটি তদন্ত করছি আমরা। তদন্তে অনেকেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা আতিকুল হাসানও রয়েছেন। তাকে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার সম্পদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৯ এবং ২০ জুলাই মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল হোতা জসীম উদ্দীন ভূঁইয়াসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তাদের গ্রেফতারের পরপরই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের বিশাল এক সিন্ডিকেটের খোঁজ পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই মামলার সূত্র ধরেই মাস দুয়েক আগে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় একটি মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ