বাসে আগুন ক্ষুব্ধ ববি শিক্ষার্থীদের, সমাধানের খোঁজে কর্তৃপক্ষ-মালিকপক্ষ

একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন ক্ষুব্ধ ববি শিক্ষার্থীরা
একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন ক্ষুব্ধ ববি শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

বরিশালে রাতের আঁধারে মেসে মেসে শিক্ষার্থীরা সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়ার পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) এলাকা। সন্ত্রাসীদের নৃসংস পিটুনিতে ও কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর প্রতিবাদে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও মালিকপক্ষ।

জানা গেছে, সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের সামনের ঢাকা-পটুয়াখালী ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তারা। এতে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় পাঁচ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে কুয়াকাট এক্সপ্রেস নামে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এছাড়া রাস্তায় ইট ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন তারা। ভাংচুর করেন কয়েকটি যানবাহন। বেলা বাড়ার সঙ্গে আরো অনেক শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে অংশ নেন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের উপর অপারেশন সার্চ লাইটের মতো যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাবো। রাজপথ ত্যাগ করবো না।

শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলি হাউজিংয়ে শিক্ষার্থীদের মেসে ববি শিক্ষার্থীদের উপর সশস্ত্র হামলার চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। হামলায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নৃসংশ হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ববি শিক্ষার্থীদের (ভিডিও)

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান তমাল জানান, রাত দেড়টার দিকে পরিবহন নেতা কাওছার হোসেন শিপনের শ্রমিকরা মেসে মেসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করেন। এ সময় মারধর করে সড়কের পাশের ডোবায় ফেলে দেন তাদের। রাতে মাহমুদল হাসান তমাল ফেসবুক লাইভে শিক্ষার্থীদের বাঁচনোর জন্য অনুরোধ জানান। এ ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

তবে রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঝামেলা বিআরটিসি বাসের সাথে। তারা বলছেন- আমার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে- এটা ঠিক না। ছাত্ররা অনুমানের ওপর আমাকে দোষারোপ করছেন। কারণ ওরা যখন বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর করে, তখন আমি তাদের বলেছিলাম ভোগান্তি না করে সড়ক অবরোধ তুলে নাও। এ নিয়ে ওদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওরা ধারণা করছে, সে কারণে আমি হামলা চালাতে পারি।’

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালী) মো. রাসেল বলেন, ‘হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপাচার্য আন্দোলনরতদের সাথে বৈঠকে বসেছেন বলে জেনেছি।’ পুরো পরিস্থিতি পুলিশ পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গভীর রাতে আমাদের নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের উপর আমানবিক হামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। হামলার ঘটনার শুনার পর পরই থেকেই প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিচ্ছে। রাতেই আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যেসব অভিযোগ তারা করেছেন সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ