মিন্নির ‘প্রাণপণ চেষ্টা’র সবটুকুই মিছে! (ভিডিও)

রিফাত হত্যা
রিফাত হত্যা

রিফাত শরীফকে এলোপাতারি কোপাচ্ছিলেন নয়ন বন্ড ও তার সঙ্গীরা। আর তাকে বাঁচাতে প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন আয়শা আক্তারা মিন্নি। আদালতের রায়ে প্রমাণ হয়েছে, এই ‘প্রাণপন চেষ্টা’ শুধুই মিছে। মিন্নির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

শুরুর দিকে আলোচিত এ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। কিন্তু সময় যতই গড়ায় হত্যার আসল রহস্য উন্মচিত হতে থাকে। মিন্নিকে সাত নম্বর আসামি করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে পুলিশ।

কিন্তু কি অপরাধে সাক্ষী থেকে আসামি হয়ে গেলেন মিন্নি? সেই প্রশ্ন হয়তো এখনও অনেকের অজানা।

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী মজিবুল হক বলেন, মামলায় বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, আয়শার পরিকল্পনায় এবং তাঁর কারণেই এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এতে বলা বলা হয়েছে, হত্যার আগে মিন্নির মামলার মূল আসামি নয়ন বন্ডের সঙ্গে এক মাসে ৪৪ বার এবং নয়ন বন্ড মিন্নির ১৬ বার ফোনে কথা বলেছেন। এ ছাড়া অসংখ্যবার খুদে বার্তা চালাচালি করেছেন।

মামলার প্রধান ও প্রত্যক্ষ সাক্ষী মিন্নিকে আসামি করার পেছনে যেসব কারণ রয়েছে, তার কিছুটা জানা গেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার মাধ্যমে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা জানান, মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমত মিন্নি তার স্বামী রিফাত হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তা ছাড়া মামলায় এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজী, তার ভাই তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজী, ছয় নম্বর আসামি রাব্বি আকন এবং ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মিন্নির সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

তিনি আরও জানান, রিফাত হত্যায় নয়ন বন্ডের সঙ্গে পরিকল্পনায় ছিল মিন্নি। ২৬ জুন ঘটনার দু’দিন আগে রিফাত শরীফ হেলাল নামে তার এক বন্ধুর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের খুব ঘনিষ্ঠ। তাই ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড দ্বারস্থ হয় মিন্নির। নয়ন বন্ডের অনুরোধে হত্যাকাণ্ডের দু’দিন আগে রাতে সেই ফোন রিফাত শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু এ ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মারধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই ফোন তার হাতে তুলে দেন। এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মারধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে বলেন নয়নকে। এরপর ওইদিন বিকেলে বরগুনা কলেজ মাঠের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নয়ন বন্ড ও তার বাহিনীর সঙ্গে রিফাত শরীফকে মারধরের বিষয়ে সভা করেন মিন্নি। তা ছাড়া রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির একাধিকবার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী কলেজের সামনে তাকে মারধরের কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময়ক্ষেপণ করেন। এর জন্য মিন্নি রিফাত শরীফের বাধা উপেক্ষা করে আবার কলেজে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই নয়ন বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্র হয়ে রিফাত শরীফকে আটক করে মারধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্বদিকে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মারধর করা হচ্ছে দেখেই মিন্নি স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন। তবে পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করলে মিন্নি তখনই এগিয়ে আসেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence