রাজধানীতে মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত সেই গৃহকর্মীর নাম-পরিচয় জানা গেল

লাল বৃত্তে অভিযুক্ত গৃহকর্মী ‘আয়েশা’
লাল বৃত্তে অভিযুক্ত গৃহকর্মী ‘আয়েশা’  © টিডিসি সম্পাদিত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডে নিজেদের ফ্ল্যাটে মা–মেয়েকে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন গৃহকর্মী ‘আয়েশা’কে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা।

তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সন্দেহভাজন গৃহকর্মীকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তার প্রকৃত নাম-পরিচয় এবং স্বামীর পরিচয়ও জানা গেছে। আসামী বার বার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেপ্তারে আমাদের কয়েকটি স্থানে অভিযান চলছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় জানাবো।

এর আগে, গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যার পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া প্রায় ২০ বছর বয়সী এই তরুণীকে জোড়া খুনের সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করছেন স্বজনেরা। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক।

পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তসূত্র বলছে, গৃহকর্মী নিজের আসল নাম ও ঠিকানা গোপন করেছিলেন। বাসার কাজে যোগ দেওয়ার সময় সঙ্গে কোনো মোবাইল ফোনও ছিল না। পরে যে ফোনটি নিয়ে গেছেন, সেটি বাসা থেকে বেরিয়েই বন্ধ করেন। আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার বেশির ভাগই অচল থাকায় তিনি কোনদিকে পালিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ের খুনের আসামী আয়েশার পরিচয় ‘অজ্ঞাত’, সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল

সূত্র বলছে, লায়লা আফরোজের পরিবারের সঙ্গে তরুণীর আগের কোনো ফোনযোগাযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি সব সময় বোরকা পরে থাকতেন, তাই ভবনের সিসিটিভিতেও তার মুখ স্পষ্টভাবে ধরেনি। ফলে তাকে শনাক্ত করতে ম্যানুয়ালভাবে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়েছে।

এদিকে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার ঘটনায় সোমবার মামলা করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তার বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

মামলার বাদী আজিজুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। এজাহারে তিনি জানান, চার দিন আগে ‘আয়েশা’ তাদের বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সোমবার সকাল সাতটার দিকে তিনি কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। পরে স্ত্রী লায়লার মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সকাল ১১টার দিকে বাসায় ফেরেন।

বাসায় ঢুকে তিনি দেখেন, স্ত্রী গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। বাসার ফটকের কাছে গুরুতর জখম অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজিজুল জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আসামি বাসায় প্রবেশ করেন। পরে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বের হয়ে যান। তার হাতে ছিল লুট করা একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও আরও কিছু মূল্যবান সামগ্রী।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence