ঘুষ নিয়ে মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ এসআইয়ের বিরুদ্ধে

অভিযুক্ত এসআই মোঃ আবু সাঈদ বাবলা
অভিযুক্ত এসআই মোঃ আবু সাঈদ বাবলা  © টিডিসি ফটো

রংপুরে ঘুষ নিয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে বাদী হয়ে পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটনের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পুলিশ কমিশনার মোঃ রুহুল আমিন। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ আবু সাঈদ বাবলা রংপুর মেট্রোপলিটনের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) সাব ইন্সপেক্টর  (এসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, রংপুর নগরীর ধর্মদাস মিলনপাড়া এলাকার হাসানুল ইসলামের স্ত্রী মোছাঃ রাজিয়া সুলতানার সঙ্গে তার ননদ হুরুম মাকছুরার দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিকভাবে দ্বন্দ্ব বিরাজমান। এরই জেরে রাজিয়া সুলতানার একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মানহানি ও হুমকিধামকির মামলা দায়ের করে হুরুম মাকছুরা। মামলায় আসামি করা হয় রাজিয়া সুলতানার নিরক্ষর পিতা মোঃ আব্দুর রহিমকে। মামলায় উল্লেখ করা হয় রাজিয়া সুলতানা তার নিরক্ষর পিতার যোগসাজশে গত ১৪ জুন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মানহানি করেছেন ও পিতাকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন রাতে নিজ নিজ বাসার সামনে গালিগালাজসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন। আদালতে দাখিলকৃত মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যটা নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী আব্দুর রহিমের কন্যা রাজিয়া সুলতানা জানান, আমার বাবা একজন নিরক্ষর মানুষ। আমার মা দীর্ঘদিন থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত। মামলায় ঘটনার দিনের বর্ণিত সময়ে মায়ের চিকিৎসার জন্য বাবা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। এই বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বাবলাকে আমি সমস্ত ডকুমেন্টস দেয়ার পরেও ওনি আমার নিরক্ষর পিতাকে ফেসবুকে পোস্টের ঘটনায় মানহানির ঘটনায় অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। এছাড়াও বাবা ঢাকায় অবস্থানকালীন সময়ে রংপুরে হুমকি ধামকির কাল্পনিক ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনপূর্বক তদন্ত না করে ও আমার পিতার সঙ্গে কথা না বলেই মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে হুরুম মাকছুরার কথামতো আমার পিতাকে অভিযুক্ত করে মনগড়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন। আমি ন্যায্য বিচার চাই।

এবিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) এর এসআই মোঃ আবু সাঈদ বাবলা জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি কি প্রতিবেদন দিয়েছি এটা দেখলেই তারা আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করতো না। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী তারিখেই মামলা খারিজ হয়ে যাবে। তবে তদন্ত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাজিয়া বেগমের সঙ্গে তার নিরক্ষর পিতাকেও মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।

রংপুর মেট্রোপলিটনের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) পুলিশ কমিশনার মোঃ রুহুল আমীন জানান,বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। অভিযোগের তদন্তের চিঠি পেলে এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলী বিপিএম জানান,যে কোন অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযুক্ত অফিসারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেই। অভিযোগপত্রটি তদন্তের জন্য ডিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

 


সর্বশেষ সংবাদ