থানায় আটক স্বামীকে খাবার দিতে গিয়ে কারাগারে স্ত্রী

স্বামী স্ত্রী
স্বামী স্ত্রী  © টিডিসি ফটো

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে জমি সংক্রান্ত মামলার তদন্তে গিয়ে দুই পক্ষের হাতাহাতির মধ্যে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে মামলার বিবাদী আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করা হলে তার জন্য থানায় খাবার নিয়ে আসা স্ত্রী জাহানারা বেগমকেও আটক করে পুলিশ। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা ইউনিয়নের কলনীপাড়া এলাকায়। গ্রেফতার আব্দুর রশিদ (৫৫) ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০) স্থানীয় বাসিন্দা। হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পরদিন মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে আব্দুর রশিদের স্ত্রী জাহানারা বেগম স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে থানায় গেলে তাকেও আটক করা হয়। এরপর বিকেলে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে আদালতে পাঠানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ধারা ইউনিয়নের কলনীপাড়ার বাসিন্দা শরীফা খাতুন আদালতে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার তদন্তে সোমবার সন্ধ্যায় বাদীকে সঙ্গে নিয়ে বিবাদীপক্ষের বাড়িতে যান হালুয়াঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম। এ সময় বাদী ও বিবাদীপক্ষের মধ্যে পুলিশের সামনেই তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় এবং একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে অসাবধানতাবশত এসআই শহিদুল ইসলামের চোখের কোনে আঘাত লাগে।

ওসি হাফিজুর ইসলামকে ঘটনাটি জানানো হলে পরে থানার এসআই শুভ্র সাহা সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিআর মামলার বিবাদী আব্দুর রশিদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ হেফাজতে আব্দুর রশিদ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে।

প্রত্যক্ষদর্শী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাদী শরীফা খাতুন একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাকে নিয়ে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই ভোগান্তিতে আছে। তদন্তকালে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে শরীফা আব্দুর রশিদকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারলে রশিদও উত্তেজিত হয়ে তেড়ে যায়। এতে এক পুলিশ সদস্যের গায়ে ধাক্কা লাগে। পরে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা হলেও, পরে তাকে গ্রেফতার করা হয় কেন— তা আমরা বুঝতে পারছি না।’

এ বিষয়ে জানতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে কোন সাড়া মেলেনি। 

ওসি হাফিজুর ইসলাম হারুন বলেন, পুলিশকে মারধর করার ঘটনায় (এসআই) শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় স্বামী স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ