‘মব’ তৈরি করে টাকা-স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ সাবেক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৩ PM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০ AM

রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে ‘মব’ সৃষ্টি করে ফ্ল্যাটে ঢুকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট এবং নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন এক নারী। আজ শনিবার (৫ জুলাই) সকালে একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ জানান নগরীর পদ্মা পারিজাত আবাসিক এলাকার ভুক্তভোগী হাবিবা আক্তার মুক্তা।
তিনি পদ্মা পারিজাত আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির পাঁচতলার ছয় নম্বর ফ্ল্যাটে বসবাস করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ৩ জুলাই দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে তার মেয়ে জামাইয়ের ভাই মাহমুদ হাসান শিশির একদল সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের বাসার সামনে ‘মব’ সৃষ্টি করেন। এরপর তার ফ্ল্যাটে ঢুকে নগদ দুই লাখ টাকার বেশি এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। একইসঙ্গে তাকে নির্যাতনও করা হয়।
এটি সরাসরি ডাকাতির শামিল মন্তব্য করে তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি একাই বাসায় ছিলেন। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিকাল ৪টার দিকে শিশির আবারও পুলিশ ও স্থানীয় কিছু লোক নিয়ে এসে ‘তল্লাশির নামে নাটক’ করেন। এই সময়ের সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরা ফুটেজ তাদের কাছে এবং পুলিশের কাছেও রয়েছে বলে জানান হাবিবা।
ঘটনার নেপথ্যে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের কথা তুলে ধরে হাবিবা বলেন, শিশির দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়ে জামাই মেহেদী হাসান সিজারকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করে আসছে। আমার মেয়ে জামাইয়ের বাবা মাহবুব সাহেব ছিলেন একজন সুপরিচিত ঠিকাদার। তার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি এককভাবে দখলের জন্য আমার জামাতা সিজারকে নানাভাবে হয়রানি করছে শিশির।
তিনি বলেন, ২৯ জুন সিজারের নিজ বাড়িতে হামলারও ঘটনা ঘটায় শিশির ও তার অনুসারীরা। সেই ঘটনার সিসি ক্যামেরার ভিডিও রয়েছে।
আমাদের জিম্মি করে সিজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই শিশির এই ষড়যন্ত্র করেছে বলেও মন্তব্য করেন হাবিবা।
ঘটনার পরপরই হাবিবা আক্তার মুক্তা নগরীর চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি ঘটনার সব তথ্য-প্রমাণ পুলিশকে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাহমুদ হাসান শিশির বলেন, অভিযান চলাকালে সেখানে নেতাকর্মী, পুলিশ, এমনকি সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। আমি কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেইনি। বরং আমার বড় ভাইয়ের শাশুড়ি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
তিনি দাবি করেন, তার ভাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন এবং বর্তমানে সম্পদের কারণে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে।
চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, বাড়ি ঘেরাও ও ভেতরে ঢুকে লুটপাটের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, মামলায় হাবিবা আক্তার তার জামাতার ভাই এবং রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাহমুদ হাসান শিশিরসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও আট থেকে ১০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নগরীর পদ্মা পারিজাত এলাকার একটি আটতলা ভবন ঘেরাও করেন স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী। তাদের দাবি ছিল, এই ভবনে অবস্থান করছেন নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল মাসুদ রনি।
যদিও অনেক আগে থেকেই তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকারকে ফোন করেন যুবলীগ নেতা তৌহিদ আল মাসুদ রনি।
তিনি বলেন, আমি অনেক দূরে, এত কষ্ট করে লাভ নেই। সময় হলে নিজেই ফিরে আসব।