ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারল স্বামী, লাশ নিয়ে থানায় ১২ ঘন্টা পরিবার
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ০৯:২৮ PM , আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫, ০৮:৩২ PM

রংপুরের হারাগাছ এলাকায় যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। নিহত রেজওয়ানা দিল আফরোজ (২২) ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শুক্রবার সকালে মারা যান।
তাঁর বাবা রেজাউল করিমের অভিযোগ, জামাতা আব্দুল করিম একটি ট্রাক কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করছিলেন। যৌতুক দিতে না পারায় শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, তাঁর মেয়ে রেজওয়ানার (২২) সঙ্গে রংপুরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরেয়ার তলের আব্দুল করিমের তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে জামাতা যৌতুক দাবি করে আসছেন। ৮ জুন বিকেলে তাঁকে হত্যার জন্য জামাতা ঘরের দরজা বন্ধ করে মেয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিলে চিকিৎসকেরা তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ঢাকায় নিতে বলেন। চার দিন চিকিৎসাধীন থেকে গতকাল সকালে তাঁর মেয়ে মারা যান।
নিহতের বাবার দাবি, ঘটনার সময় তিনি জামাতার বাড়িতেই ছিলেন। আগুন লাগানোর পর স্থানীয়রা রেজওয়ানাকে উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকায় পাঠায়। মৃত্যুর পরও থানায় মামলা করতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
রেজাউলের অভিযোগ, ঘটনার দিন তিনি তাঁর জামাতার বাড়িতে ছিলেন। তাঁর জামাতা একটি ট্রাক কিনেছিলেন। এ জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাঁর মেয়ের শরীরে আগুন দেওয়া হয়।
রেজওয়ানার মামা হেলাল মিয়া অভিযোগ করেন, গতকাল রাত ১২টায় অ্যাম্বুলেন্সে লাশ নিয়ে আসার সময় নগরের মাহীগঞ্জ থানা থেকে ফোন করে লাশ থানায় নিয়ে আসতে বলা হয়। লাশের অ্যাম্বুলেন্সে অভিযুক্ত আব্দুল করিম, তাঁর বোন পারভীন ও ভগ্নিপতি ফখরুলকে তাঁরা পুলিশে দিলে থানা-পুলিশ পারভীন ও ফখরুলকে ছেড়ে দেয়। পরে তাঁরা দুজনকে থানার সামনে থেকে আটকে আবার পুলিশের সোপর্দ করেন।
শনিবার সকাল পর্যন্ত থানায় অবস্থান করেও মামলা না হওয়ায় নিহতের পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে। ওসি প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, এটি আত্মহত্যা। পরে ঠিকানা ভুলের অজুহাত দেখিয়ে মামলা নিতে দেরি করছেন বলে জানান।
মাহিগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এজাহারে বাদীর ঠিকানা ভুল থাকায় মামলা নিতে সময় লাগছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মারুফ আহমেদ জানান, তিনজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।