পিস্তলটি অবৈধ ছিল ছাত্রকে গুলি করা সেই শিক্ষকের, মামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৯ AM , আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৬ AM
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনায় সেই শিক্ষকের পিস্তলটি ছিল অবৈধ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরিফের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) রাতে সদর থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট বগুড়া সদরের ধানসিঁড়ি নাটাইল গ্রামের বাসিন্দা আল আমিন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: রাতে ছাত্রীদের ভিডিও কল দিতেন মেডিকেল কলেজের সেই শিক্ষক
এর আগে গতকাল সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক কলেজের মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে সেদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কলেজ থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকের পর সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আব্দুল হান্নান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। তিনি যে পিস্তল দিয়ে শিক্ষার্থীকে গুলি করেছিলেন তা মূলত অবৈধ।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, শিক্ষার্থী তমালের ডান ঊরুতে গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা রয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
অস্ত্র আইনে করা মামলাটিতে বাদী উল্লেখ করেন, আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল (২২), শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জ-এ ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে বর্তমানে ৩য় বর্ষে অধ্যায়নরত আছে। অন্য ৩য় বর্ষের আইটেম পরীক্ষা শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাডেমি ভবনের ৪র্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এসময় আমার ছেলের বন্ধু আক্তারুজ্জামান বিকেল ৪টার দিকে ফোন করে বলে, আপনি দ্রুত সিরাজগঞ্জ চলে আসেন। আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমাল হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি তাৎক্ষণিক বগুড়া থেকে রওনা হয়ে সিরাজগঞ্জ এসে আমার ছেলেকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে সংকটাপন্ন অবস্থায় দেখি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলে আরাফাত আমিন তমালের ক্লাসমেটসহ তার অনেক সহপাঠী জানান, আসামি কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের লেকচারার। তিনি সর্বদা শিক্ষকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। তিনি সবসময় ব্যাগে অস্ত্র ও ছোরা নিয়ে ক্লাসে এসে অস্ত্র টেবিলের ওপর রেখে ক্লাসে লেকচার দিতেন। ছাত্রছাত্রীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ক্লাসে না আসতে বললে তিনি তাদের ভয়ভীতি ও গুলি করে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আজ পরীক্ষা চলাকালে বিকেল ৩টার দিকে আসামি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের অহেতুক বকাবকি করেন। বকাবকির একপর্যায়ে তার ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার করার উদ্দেশ্যে গুলি করলে গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের উরুর উপরের অংশ লেগে গুরুতর জখম করে।
তিনি মামলায় আরও উল্লেখ করেন, সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলে, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা চলাকালে আমার ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।