চাঁদা না পেয়ে অপহরণ, ঢাকা কলেজের দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী এস এম শফিক (ডানে) ও জনি হাসান।
গ্রেপ্তার ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী এস এম শফিক (ডানে) ও জনি হাসান।  © টিডিসি ফটো

চাঁদা আদায় করতে না পেরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তাকে অপহরণের অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৬ মে) রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা কলেজের নর্থ হলের ১২০ নম্বরে রুমে এই ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহসম্পাদক জনি হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এস এম শফিক। 

অপহরণ করে চাঁদাবাজির ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল গনি সাবু বলেন, বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাদেরকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন জানালে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নিউ মার্কেট থানায় হওয়া মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অয়ন সিগমাইন্ড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করেন ভুক্তভোগী মো. মেহেদী হাসান। প্রতিষ্ঠানটি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ করে। অভিযুক্তরা ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে এবং ভুক্তভোগী মেহেদীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকা থেকে প্রতিষ্ঠানটির লাগানো সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যায়। রাতে সিয়াম ও রমজান নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদীকে ফোন করে বিষয়টি জানায়।

খুলে নিয়ে আসা ক্যামেরা ফেরত পেতে হলে মেহেদীকে ঢাকা কলেজে যেতে বলেন তারা। এসময় তৌকির নামে এক কর্মচারীকে ঢাকা কলেজে পাঠান মেহেদী। পরে তৌকিরকে জিম্মি করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ছাত্রলীগ নেতারা। ভুক্তভেগী মেহেদী ঢাকা কলেজের নর্থ হলে গেলে তাকেও জিম্মি করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাদের নেতৃত্বে মেহেদী ও তৌকিরকে হলে আটকে রেখে তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। রাতে মারধর করে তৌকিরকে ছেড়ে দিলেও মেহেদীকে রাতভর মারধোর করা হয়।

অতিরিক্ত নির্যাতনের কারণে মেহেদীর অবস্থা বেগতিক দেখে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বের করে নিউ মার্কেটের গাউছিয়া মোড়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। এই সময় নিউ মার্কেট থানার টহল পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা মেহেদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদী বাদী হয়ে জনি হাসান, এস এম শফিকসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা করেন।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ কর্মী মো. গোলাপ হোসেন, মোহেরাব হোসেন সিয়াম, অর্নব, মো. রমজান, গোপাল, রাব্বী তালুকদার , মো. বেল্লাল হোসেন, তারিফ, সালমান, মো. রায়হান, মাসুম, ফাহিম, শাহীন।

সূত্রে জানা গেছে, মামলা আসামিরা সবাই নর্থ হলের আবাসিক ছাত্র এবং সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এর আগেও জনি ও শফিকের নেতৃত্বে নিউ মার্কেটসহ আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

অপহরণ ও নির্যাতন মামলায় দুই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence