শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের পথে এক পা বাংলাদেশের
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:১৬ AM , আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৩ AM
এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে টালমাটাল পারফরম্যান্সের পর অবশেষে স্বস্তির জয় পেল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে জয়ের দেখা পেয়েছে লিটন দাসের দল। আর এই জয়ের পথে হয়েছে তিনটি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড।
১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয়, এশিয়া কাপের ইতিহাসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। এর আগে, এবারের আসরেই হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৪ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে, ১৬৮ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ১ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের পঞ্চম বলেই খালি হাতে ফেরেন ওপেনার তামিম।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৩৪ বলে ৫৯ রান যোগ করেন লিটন ও সাইফ। তবে ইনিংসের সপ্তম ওভারে লিটনকে ফেরান হাসারাঙ্গা। ১৬ বলে ২৩ রান করে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।
তৃতীয় উইকেটে সাইফ-হৃদয় জুটিতে ৪৫ বলে ৫৪ রান আসে। ইনিংসের ১৪তম ওভারের শেষ বলে সাইফ ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ফেরেন এই ওপেনার।
এরপর ২৭ বলে ৪৫ রান যোগ করেন তাওহীদ-শামীম। কিন্তু ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১৫৯ রানে হৃদয়কে ফেরান দুশমন্থ চামিরা। ফেরার আগে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ বলে ৫৮ রান করেন হৃদয়।
এরপর জয় থেকে মাত্র ১ রান দূরে থাকতে ৪ বলে ৯ রান করে ফেরেন জাকের। ওভারের চতুর্থ বলে শেখ মেহেদীও ফেরেন। পরে পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন নাসুম।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে তাসকিনের কল্যাণে ভাঙে ওপেনিং জুটি।
পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই ছক্কা হজম করেন তাসকিন আহমেদ। ফ্লিক করে দারুণ সেই শট খেলেন নিসাঙ্কা। তবে ছক্কা খাওয়ার পর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান অভিজ্ঞ এই পেসার।
ওভারের পরের ৪ বলে মাত্র ২ রান খরচা করেন। আর ওভারের শেষ বলে থামিয়ে দেন নিসাঙ্কা ঝড়। ডিপ স্কয়ার লেগে দারুণ এক ক্যাচ নেন সাইফ। এতে ১৫ বলে ২২ রানে ফেরেন লঙ্কান এই ওপেনার।
নিসাঙ্কা থাকলেও কুশল মেন্ডিস ঝড় চলছিল। তবে তাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি মেহেদী। পরের ওভারেই এই লঙ্কান ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটান।
ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন মেন্ডিস। নিখুঁতভাবে সেই ক্যাচ লুফে নেন সাইফ। ২৫ বল খেলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
পরের ওভারের প্রথম বলেই আরেকবার উল্লাসে মাতার উপলক্ষ এনে দেন মেহেদী। ধুঁকতে থাকা কামিল মিশারাকে বোল্ড করেন তিনি। ১১ বলে ৫ রান করেন মিশারা।
ম্যাচের শুরুর আগেও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক ছিলেন কুশল পেরেরা। তবে তিনি ব্যাটিংয়ে নামার আগেই সেই রেকর্ড ছিনিয়ে নেন কুশল মেন্ডিস (২ হাজার ১৯৮ রান)।
তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সেই রেকর্ড। ব্যাট হাতে নামার পর মাত্র ১২ রান করতেই আবার রেকর্ডটি নিজের করে নেন পেরেরা। তিনিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাকে ফেরান মোস্তাফিজ।
মাঝে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ চললেও স্লগ ওভারে পুরোপুরি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে, ইনিংসের ১৯তম ওভার টাইগারদের জন্য বড় ব্রেকথ্রুর মুহূর্তই। আগের দুই ওভারে দাসুন শানাকা ও চারিথা আসালাঙ্কার ক্যাচ মিস করেছিলেন ফিল্ডাররা। কিন্তু এবার প্রথম বলেই রানআউট।
তাওহীদ হৃদয় ক্যাচ মিস করলেও দ্রুত বল সংগ্রহ করে স্টাম্পের দিকে ছুঁড়ে দেন, আর সেটি দারুণভাবে ধরেই লিটন আউট করেন আসালাঙ্কাকে। ১২ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
চতুর্থ বলে ফের সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজ। লিটনের গ্লাভসে ক্যাচ তুলে দেন কামিন্দু মেন্ডিস। শেষ বলেও বাজিমাত করেন মোস্তাফিজ। এবার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ফেরান।
সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৬৯ রান, যা টাইগারদের সামনে রেকর্ড এক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়ায়।