জুলাই আন্দোলনে পার্কে সেই হাসিমাখা ছবির ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৩ PM , আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৩ PM

গেল বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নীরব ভূমিকার জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সাকিব আল হাসান। গোটা দেশ যখন আন্দোলনে উত্তাল, সে সময়ে কানাডায় সাফারি পার্কে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল এই অলরাউন্ডারকে। সাকিবের স্ত্রী শিশির সেই ছবি ফেসবুকে দিয়েছিলেন। আর দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেই সময়ে সাকিবের ভূমিকা নিয়েও নানান প্রশ্ন উঠে। ঘটনাক্রমে এরপর আর দেশেই ফেরা হয়ে উঠেনি সাকিবের।
এদিকে সে সময়ে কেন এমন নীরব ছিলেন, পার্কে ঘোরাঘুরির ছবি দেওয়া কি ভুল ছিল; এমন অনেক কিছু নিয়েই সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক।
সাফারি পার্কে ঘোরাঘুরির ছবি নিয়ে সাকিবের মন্তব্য, ‘সত্যি বলতে, আমি তখন বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) খেলতে গেলাম, তারপর কানাডায়। ছবিটি কানাডায় তোলা। আমি নিজে এটি পোস্ট করিনি। তবুও, আমি এর দায়ভার নিচ্ছি। এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, হ্যাঁ, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। আমি এটা স্বীকার করছি। তবে আমার মনোযোগ সব সময় ক্রিকেটের দিকে ছিল—সংসদ সদস্য হওয়ার আগে এবং পরেও। আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়িত হতে বলা হয়নি। আমাকে সব সময় বলা হয়েছে, "শুধু ক্রিকেট খেলো।" তাই আমি সেদিকেই মনোযোগ দিয়েছি।’
সাকিব যোগ করেন, ‘সত্যি বলতে, আমি ভাবিনি এটা (ছবিটা) এত ছড়িয়ে পড়বে। প্রতিক্রিয়া শুরু হওয়ার পর, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। অনেকে আমাকে বলেছে, ওই সময়ে ওই ছবি দেখে তারা কষ্ট পেয়েছে। এখন বুঝতে পারছি, ওটা একটা ভুল ছিল। এমনকি অন্যরাও একই রকম জিনিস পোস্ট করলেও, আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে। এটা হয়তো আমি বলেই হয়েছে। তবে আমার আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’
কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ খেলার সময়ে এক দর্শকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সাকিব। সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। সাকিবের ভাষ্যমতে, ‘আমার মনে হয়, সেই লোকটা আমাকে উসকানি দেওয়ার উদ্দেশ নিয়েই এসেছিল। অথবা হয়তো সে খুবই হতাশাগ্রস্ত ছিল। সে বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, কেন আমি (দেশের ওই অবস্থায়) কিছু করছি না। একপর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি, ‘‘ভাই, আপনি কী করেছেন?’’। সেখান থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। দেখুন, আমি কিছু করেছি কি না, সেটা মানুষ বিচার করবে। কিন্তু কেউ যদি আমাকে বারবার প্রশ্ন করে, আমার কি জবাব দেওয়ার অধিকার নেই? আমি এমনকি তাকে—এবং সেখানে থাকা অন্যদের জিজ্ঞাসা করেছি, আমি কী করতে পারি? আমি তো ওই সময়ের ঘটনাগুলো উপেক্ষা করছিলাম না। আমি শুধু জানতাম না কী করতে হবে, কোনটা কার্যকর হবে। সরকার এবং অন্যরা আমাকে কিছু পোস্ট করতে বলেছিল। কিন্তু তাতে কী লাভ হতো? ওটা কি সাহায্য করত? ওটা কি আগুনে ঘি ঢালত? আমি সব সময় দায়িত্বশীলভাবে কাজ করায় বিশ্বাস করি। আমি যদি সরাসরি পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে ফাঁকা বুলি আওড়ে কী লাভ!’
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক বিতর্কে ক্রিকেটে ব্রাত্য হয়ে পড়া সাকিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই থাকছেন। হোম অব ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছেও পূরণ হয়নি। পাকিস্তান ও দুবাইয়ে হওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও খেলতে পারেননি।