ঈদের দিনেও আন্দোলনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ১০:৩৮ AM , আপডেট: ১০ জুন ২০২৫, ১২:১৫ AM
প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মরত জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজনসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে টানা ১১ দিনের মতো আন্দোলন করছে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা। শনিবার (৭ জুন) ঈদের দিনেও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাদের আন্দোলন চলেছে।
আন্দোলনকারীরা জানান, গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য তিনটি মাধ্যমে ছয়টি বিষয়ে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আইন, কৃষি, লিঙ্গসমতা এবং ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১১ সালে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়। সেবাগুলো তথ্যকেন্দ্র ও বাড়িতে গিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে চালু করা হয়। পাশাপাশি, তথ্যকেন্দ্রগুলো থেকে বিনামূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষা, ওজন পরিমাপ, রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ, শরীরের তাপমাত্রা ও উচ্চতা পরিমাপসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও বৃত্তি, প্রতিবন্ধীদের ভাতার ও বিভিন্ন চাকরির-প্রশিক্ষণের তথ্য ও আবেদন, উদ্যোক্তাদের ই-লার্নিং প্রশিক্ষণ প্রদান, পরীক্ষাসহ অনলাইনে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয়ের ফল অবহিতকরণ এবং ক্যারিয়ারবিষয়ক পরামর্শসহ তথ্য ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হয় এসব কেন্দ্র থেকে। এমনকি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধান ও সচেতনতা তৈরি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ, আইনগত সহায়তা প্রদানের কাজও করেন এসব তথ্য আপারা।
তাদের অভিযোগ, প্রকল্প শেষে চাকরি স্থায়ীকরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বিভাগে স্থানান্তরের প্রতিশ্রুতির বিষয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবে উল্লেখ করে এসব নারীকে নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন তা বরখেলাপ করা হচ্ছে। চলতি জুন মাস থেকে প্রকল্পটি বন্ধ হতে হতে যাচ্ছে। সেজন্য সারা দেশে প্রতিটি উপজেলায় তথ্য আপাদের ব্যবহৃত কার্যালয় গুটিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয় থেকে। চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য নিয়োগের তিন মাস পর থেজে বেতনের একটা অংশ কেটে রাখা হতো।
তারা আরও বলেন, আমরা একাধিক বার মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছি। বর্তমান সরকার আমাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তৃতীয় পর্যায়ে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগ দিচ্ছে। এজন্য আমরা আসলে বাধ্য হয়েছি রাস্তায় বসে আন্দোলন করতে। আজ ঈদের দিন। আমাদেরও পরিবার আছে, কথা ছিল তাদের সঙ্গে একসাথে ঈদ উদযাপন করব। পরিবার-সন্তান ছেড়ে ঈদের দিন রাস্তায় বসে থাকার কষ্টটা কতটা যন্ত্রণার তা বলে বোঝাতে পারব না। আজ ১১ দিন ধরে এখানে অবস্থান নিয়েছি, সরকারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি।
তথ্য আপাদের চার দফা দাবি গুলো হলো—প্রকল্পে কর্মরত সব জনবলকে সমগ্রেডে পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর, যেহেতু রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য সময়ের প্রয়োজন তাই প্রয়োজনীয় সময় ৩-৫ বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি, পদ সৃজন করে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্ভব না হলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের ভিত্তিতে সম গ্রেডে আত্তীকরণ এবং কর্তন করা বেতন ও ভাতা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা।