ভিকারুননিসার একাদশ শ্রেণীর এক প্রশ্নে ৩০ ভুল!

ভুলেভরা প্রশ্নপত্র
ভুলেভরা প্রশ্নপত্র  © টিডিসি ফটো

দেশসেরা স্কুল রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেই স্কুলে একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অনেকগুলো শব্দের বানান, ব্যাকরণগত ভুল ছিলো। প্রশ্নের প্রথম পাতাতেই দশটির বেশি বানান ভুল করা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা। 

জানা গেছে, গত ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রতিষ্ঠানটিতে একাদশ শ্রেণির অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। ওইদিন বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে অনেকগুলো শব্দের বানান ভুল দেখা গেছে।

প্রশ্নপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রশ্নের শুরুতে ‘ঘণ্টা’ শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে। প্রশ্ন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এতে ঘণ্টা বানান লেখা হয়েছে ‘ঘন্টা’। ‘প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করছে’ এ বাক্যটি লেখা হয়েছে ‘প্রাইমারি স্কুলের চাকরি করছেন’। যথাসময়কে লেখা হয়েছে ‘যথার্থ সময়’। ভেঙে বানান লেখা হয়েছে ‘ভেঙ্গে’। দাবি বানান লেখা হয়েছে ‘দাবী’।  নিরূপণ বানান লেখা হয়েছে ‘নিরুপন’। বিশ্লেষণপূর্বককে লেখা হয়েছে ‘বিশ্লেষণ পূর্বক’।

২ নম্বর প্রশ্নে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার ৬ লাইনে ৫টি ভুল করা হয়েছে। সেখানে ‘ম্রিয়মাণ’কে লেখা হয়েছে `ম্নিয়মান`। এভাবে `নিজেরে`র জায়গায় `নিজের`, `যেন`র জায়গায় `যেনো`, `ভর`-এর জায়গায় `ভয়` এবং `সংশয়`-এর বানান লেখা হয়েছে ‘সংয়শয়’। কবিতার প্রশ্নের মধ্যে `গ্রথিত` শব্দের জায়গায় লেখা হয়েছে `প্রথিত`।

আরও পড়ুন: দেশসেরা স্কুল রাজশাহীর, কলেজ ঢাকার

দ্বিতীয় উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনকে এক শব্দে লেখা হয়েছে। জ্ঞানতাপস-এর বানান লেখা হয়েছে, ‘জ্ঞানতাস’। কবিতার মাত্রা বানান লেখা হয়েছে ‘মাত্র’। আরেক প্রশ্নে তোমার মতামত লিখতে গিয়ে লেখা হয়েছে ‘মোতার’ মতামত।

এছাড়া প্রশ্নপত্রের অন্যান্য জায়গায় ব্যাপক, শোষণ, ধারণ, মোকদ্দমা, শূন্য, প্রকাণ্ড ইত্যাদি শব্দের বানান ভুল লেখা হয়েছে। কিছু জায়গায় ব্যাকরণগত ভুলও পাওয়া গেছে।

এভাবে গোটা প্রশ্নপত্রে ১৮টি ভুল আছে বলে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। তবে প্রশ্নপত্রটি ভালো করে ঘেঁটে দেখে সেখানে ৩০টির বেশি ভুল পাওয়া যায়। 

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অভিভাবক ফোরামের ফেসবুক গ্রুপে প্রশ্নপত্রটি একজন পোস্ট করেন। ক্যাপশনে লিখেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড  কলেজের প্রশ্নপত্রের নমুনা দেখুন। বর্তমান অতিথি অধ্যক্ষ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসলেন!

ওই পোস্টের কমেন্ট অপশনে রেজাউল কায়সার সুমন নামে একজন লেখেন, বর্তমানে শিক্ষার বারোটা বেজে গেছে। এত স্বনামধন্য স্কুলের এই অবস্থা!

মনির হোসেন নামে আরেকজন কমেন্ট করেন, একটা প্রশ্নে এত ভুল হলে ছাত্রছাত্রীরা কী শিখবে? গ্রুপে কোনো উকিল থাকলে সংশোধিত কপি এবং মূল কপি নিয়ে আদালতে রিট করুন।

এ প্রশ্নটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিভাবকরা নানা আলোচনা-সমালোচনা করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ আবদুল মজিদ সুজন বলেন, এখানকার শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থ দেখেন, গ্রুপিংয়ে সময় দেন। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে সময় বের করার চিন্তা তাদের নেই। তারা গ্রুপিংয়ে সময় বেশি দেন, মনোযোগ সহকারে প্রশ্নপত্র তৈরি করেন না। এর ফলে প্রশ্নে ভুল থেকে যায়।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি ড. ফারহানা খানম বলেন, সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষায় ড. জাফর ইকবালকে নিয়ে একটা ভুল তথ্য দেওয়ায় একজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। এ ঘটনায়ও তেমনই হওয়ার কথা। আমি অসুস্থ, বাসায় আছি। এই বিষয়ে প্রিন্সিপাল ম্যাম ভালো বলতে পারবেন।

এসব বিষয়ে জানতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence