এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২৬ জুন, এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৯:৫৭ AM , আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩৮ PM
২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হবে লিখিত পরীক্ষা, যা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এ পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, এ বছর সারা দেশে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ১০ লাখ ৫৫ হাজার, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। এবার মোট ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
২০২৪ সালের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। গত বছর পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।
এদিকে, পরীক্ষা সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নকলমুক্ত রাখতে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশ্নফাঁস ও গুজব প্রতিরোধে বাড়তি নজরদারির পাশাপাশি দেশের সব কোচিং সেন্টার আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিশেষ নজরদারি চালানো হবে।
আরও পড়ুন: ইশরাকের ‘বুকে গুলি চালায় দেন’ বক্তব্যের জবাবে আসিফ— ‘একটা মাছিকেও কখনও গুলি করিনি’
পরীক্ষা নির্বিঘ্ন করতে পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা বোর্ড। এসব নির্দেশনায় পরীক্ষা শুরুর নির্ধারিত সময়ের অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য পূরণ, উত্তরপত্র না ভাঁজ করা এবং মোবাইল ফোন কেন্দ্রের ভেতরে না আনার বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল অংশের মধ্যে কোনো বিরতি না রেখে পরীক্ষা পরিচালিত হবে। ব্যবহারিকসহ সব অংশেই পৃথকভাবে পাস করতে হবে। পরীক্ষার্থী শুধুমাত্র প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে এবং কেউ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে পারবে না—আসনবিন্যাসে কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া উপস্থিতি পত্রে স্বাক্ষর দেওয়া বাধ্যতামূলক।
এছাড়া, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড পরীক্ষার শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৩৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক রাখাসহ পরীক্ষাকেন্দ্রে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। পরীক্ষার তিন দিন আগে ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে খামে সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সেট অনুযায়ী খাম খোলা এবং অব্যবহৃত সেট ফেরত পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রশ্ন আনার সময় পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
এর বাইরে, কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নকল প্রতিরোধে পোস্টার টানানো এবং কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে শুধুমাত্র কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে। বর্ষাকাল বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির সমন্বয়ক খন্দকার এহসানুল কবির গণমাধ্যমকে জানান, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, পরীক্ষার সময় সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।